রামমন্দির না মসজিদ, অযোধ্যার বিতর্কিত জমি আসলে কার সম্পত্তি, সেই রায় দিতে পারে আদালত, কিন্তু দু'পক্ষের সম্পর্ক ভাল হওয়াই কাম্য। এই মর্মে অযোধ্যা মামলা নিয়ে মঙ্গলবার শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল আদালত। শুনানির দিন পিছিয়ে ৫ মার্চ করে দেওয়া হল।
রামলাল্লা বিরাজমান গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আইনজীবী সিএস বৈদ্যনাথন শীর্ষ আদালতের মতামতের সঙ্গে সহমত পোষণ না করে বলেছেন, "দু'পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা আগেও করা হয়েছিল"।
আর পড়ুন, জগাই-মাধাইয়ের দোষ নয়, আমাদের দোষ: মমতা
মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল । সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানি করবে মঙ্গলবার, কথা ছিল সেরকমই। কতদিন পরপর শুনানি হবে, তাও ধার্য হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবারই। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মামলার শুনানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আদালতের শুনানি পক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকায় বিভিন্ন দক্ষিণপন্থী সংগঠন অর্ডিন্যান্স নার দাবি জানিয়েছিল। তবে তা খারিজ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ গ্রহন করা যাবে না।
বিচারপতি এস এ ববড়ে মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে বললেন, "আপনারা সত্যি মনে করেন এত দীর্ঘ দিন ধরে চলা বিতর্ক শুধুমাত্র সম্পত্তিকে ঘিরে? অনেক গভীরে পৌঁছে গিয়েছে বিষয়টা। তাই দু'পক্ষের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করছি আমরা"। বিচারপতি আরও বলেন, "মধ্যস্থতার সম্ভাবনা যদি এক শতাংশও হয়, তাহলেও চেষ্টা করা উচিত"।
প্রসঙ্গত, এর আগে অযোধ্যা মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করে দেয় হয় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন, রাম মন্দির কি ভোট টানতে পারবে?
২৯ জানুয়ারি এই মামলার শুনানি শুরু হবে বলে ঠিক হলেও, বিচারপতি বাবড়েকে ‘পাওয়া যাবে না’ বলেই দিন পিছিয়ে গিয়েছিল। এবার অযোধ্যার বিতর্কিত জমি মামলায় ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া আবেদনের শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।
অযোধ্যা মামলার শুনানির জন্য পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ তৈরি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই বেঞ্চে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ ববড়ে, ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আবদুল নাজির। এই মামলার জন্য গঠিত প্রাথমিক বেঞ্চের সদস্য ছিলেন বিচারপতি ইউ ললিত। কিন্তু, তিনি এক সময়ে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং-এর হয়ে এ সংক্রান্ত মামলায় ওকালতি করায় বর্তমানে বিচারপতি হিসাবে নিজেকে বেঞ্চ থেকে সরিয়ে নেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি তিন পক্ষের (নির্মোহি আখড়া, উত্তরপ্রদেশের সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এবং রামলালা বিরাজমান) মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। এই রায়কে চ্যালেঞ্চ করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে আবেদনকারীরা। এর পাশাপাশি, নিজেদের ‘ভগবান রামের ভক্ত’ বলে দাবি করা লখনৌর ৭ বাসিন্দার আবেদনও শুনবে শীর্ষ আদালত। ১৯৯৩ সালে যে আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র অযোধ্যার ৬৭.৭০৩ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল, তাকে চ্যালেঞ্জ করেই আবেদন করেছেন এই সাত ব্যক্তি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি অযোধ্যার ৬৭ একর জমি রাম জন্মভূমি ন্যাস-সহ প্রকৃত মালিকের হাতে ফিরিয়ে দিতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি চেয়েছিল মোদী সরকার।