অযোধ্যা রায়ের এক মাস পর অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা সোমবার রায়ের রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। মুসলিম পক্ষকে মসজিদ বানানোর জন্য পাঁচ একর জমি দেবার সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা চায় তারা।
Advertisment
বার ও বেঞ্চের এক রিপোর্ট অনুসারে হিন্দু মহাসভা তাদের আবেদনে বলেছে, "মুসলিম পক্ষ বিতর্কিত জমিতে মসজিদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও তাদের মসজিদ বানানোর জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়া, ধর্মনিরপেক্ষতার সাংবিধানিক নীতির পরিপন্থী।"
পিটিশনে বলা হয়েছে, "রাষ্ট্র কাউকে মসজিদের জন্য জমি দিতে পারে না। মসজিদ ঈশ্বরের জন্য ধার্য জমিতে বানানো যায়, যার জন্য ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে। রাষ্ট্র যে জমির মালিক, সেখানে মসজিদ তৈরি হতে পারে না। মসজিদের জন্য সরকার যদি জমা দেয় তাহলে তা হবে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অংশের বিরুদ্ধে।"
হিন্দু মহাসভার হয়ে আবেদন করেছেন বিষ্ণু শঙ্কর জৈন এবং হরিশঙ্কর জৈন। মহাসভার তরফ থেকে রায়ের হিন্দুদের বিরুদ্ধে যে পর্যবেক্ষণ তাও পরিহার করার আবেদন জানান হয়েছে।
"অযোধ্যার বিতর্কিত সৌধ যে মসজিদ ছিল তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। ফলে ওই সৌধকে মসজিদ বলে যেখানে যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, তা বাদ দেওয়া হোক।" আবেদনে বলা হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি হিন্দুদের বিরুদ্ধে যেতে পারে না।
"আদালত যথন ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির কথাই বলছে, তখন ৭১২ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত পুরো সময়কালের ঐতিহাসিক তথ্যও বিবেচনা করা উচিত। আদালতের বিবেচনা করা উচিত ১৯৯০-এ কাশ্মীরে হিন্দুদের উপর যে অত্যাচার করা হয়েছে, তার কথা। মনে রাখতে হবে হিন্দুরা তাঁদের নিজেদের দেশে উদ্বাস্তু হয়েছেন এবং স্বাধীন ভারতে মুসলিমরা বহু মন্দির ধ্বংস করেছে।"
গত ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে রায় দেয় অযোধ্যার বিতর্কিত জমির পুরোটাই কোনও ট্রাস্টের হাতে তুলে দিতে হবে মন্দির নির্মাণের জন্য এবং অযোধ্যার অন্য কোথাও মুসলিমদের পাঁচ একর জমি দিতে হবে মসজিদ নির্মাণের জন্য।
এর আগে শুক্রবার ৯ নভেম্বরের রায়ের রিভিউ চেয়ে ৬টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে পাঁচটি আবেদন সমর্থন করেছে সারা ভারত মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড।
অযোধ্যা রায়ের রিভিউ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রথম আবেদন জমা পড়ে গত ২ ডিসেম্বর।