যোগী ও হিন্দু হওয়ার দরুন অযোধ্যায় মসজিদের উদ্বোধনে যাবেন না। গত বুধবারই তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। এও বলেছিলেন যে, তাঁর বিশ্বাস তাঁকে অযোধ্যায় মসজিদের উদ্বোধনে ডাকা হবে না। কিন্তু, শনিবার মসজিদ তৈরির দায়িত্বে থাকা ইন্দো-ইসলামিক কালচার ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের তরফে জানানো হয় যে, মসজিদের জন্য দেওয়া জমিতে জনস্বার্থে যেসব প্রকল্প হবে তার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অযোধ্যার ধান্নিপুর গ্রামে পাঁচ একর মসজিদ স্থাপণ করা হবে। ট্রাস্ট জানিয়েছে, ইসলামে মসজিদ নির্মাণের জন্য আলাদা করে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের রীতি নেই। তবে, মসজিদের জমিতে হাসপাতাল, গ্রন্থাগার সহ জনস্বার্থে যেসব প্রকল্প হবে তার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের সম্পাদক ও মুখপাত্র আথার হুসেন জানান, 'ট্রাস্ট অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীকে জনস্বার্থ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর ইনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাবে ও আশা করি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। এই জাতীয় প্রকল্পের মাধ্যমে জনকল্যাণ তদারকি করা তার অগ্রাধিকার।' তিনি আরও জানান যে, পাঁচ একর জমিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মসজিদ তৈরি হবে। একটি হাসপাতাল গড়ে উঠবে, তৈরি হবে গ্রন্থাগার, কমিউনিটি কিচেন ও গবেষণাগার।
আথার হুসেন মনে করেন যে, জনকল্যামমূলক প্রকল্পগুলো গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আর্থিক সহায়তাও করবেন। তাঁর কথায়, 'আমরা জনস্বার্থে প্রকল্প তৈরি করব। আশা করছি এতে মুখ্যমন্ত্রীর অবদান থাকবে।'
৫ অগাস্ট অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে রামমন্দিরের ভূমি পুজো অনুষ্ঠিত হয়। সামনের সারিতে থেকে ওই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিনই এবিপি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ্য়মন্ত্রী বলেছিলেন যে, 'মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আমার কোনও ধর্ম বা গোষ্ঠীর সঙ্গে কোনও দূরত্ব নেই। কিন্তু যোগী হিসাবে প্রশ্ন করা হলে বলব আমি কখনই মসজিদের উদ্বোধন বা শিলান্যাসে যাব না। কারণ আমি যোগী ও হিন্দু। একজন হিন্দু হয়ে সেই ধর্মের আচার অনুসরণ করে জীবনধারণের অধিকার আমার রয়েছে।’ তাঁর স্পষ্ট দাবি, যেসব রাজনৈতিক নেতারা রোজা রাখেন, ইফতার করেন, ইসলাম রীতি মেনে মাথায় টুপি দেন- তাঁরা কেবল ধর্মনিরপেক্ষতার ভান করেন। যোগীর কথায়, ‘এই ধরনের কাজ যে ধর্মনিরপেক্ষতা নয়, তা জনগণ উপলব্ধি করতে পারেন।'
এরপরই তিনি বলেছিলেন যে, 'আমাকে কেউ মসজিদের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে ডাকবেন না, আর আমি যেতেও চাই না। আমি জানি এই ধরনের কোনও আমন্ত্রণ আমি পাবও না।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন