অযোধ্যায় রাম মন্দিরের প্রথম ধাপের কাজ প্রায় শেষ। ২২ জানুয়ারি ভগবান রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা, তারপরে সকল ভক্তরা তাদের দেবতার দর্শন পেতে মন্দিরে আসতে পারবেন। অযোধ্যায় নির্মিত শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সত্যিই অবাক করার মত।। এই তথ্য জানিয়েছে শ্রী রাম জন্মভূমি ট্রাস্ট।
ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে, এই মন্দিরের দৈর্ঘ্য (পূর্ব থেকে পশ্চিম) হবে ৩৮০ ফুট, প্রস্থ ২৫০ ফুট এবং উচ্চতা ১৬১ ফুট হবে। মন্দিরটির তিনতলা। প্রতিটি ফ্লোরের উচ্চতা হবে ২০ ফুট। মন্দিরে মোট ৩৯২টি স্তম্ভ এবং ৪৪টি গেট থাকবে।
রাম মন্দিরের বৈশিষ্ট্য
- রাম মন্দিরের মূল গর্ভগৃহে, রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রথম তলায় শ্রী রাম দরবার থাকবে।
- মন্দিরে ৫ টি মণ্ডপ থাকবে। নৃত্য মন্ডপ, রঙ মন্ডপ, সভা মন্ডপ, প্রার্থনা মন্ডপ এবং কীর্তন মন্ডপ
- স্তম্ভ ও দেয়ালে খোদাই করা হচ্ছে দেব-দেবীর মূর্তি।
- মন্দিরে প্রবেশ করতে হবে পূর্ব দিক থেকে, সিংহদ্বার থেকে ৩২টি সিঁড়ি বেয়ে।
- প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের জন্য মন্দিরে র্যাম্প ও লিফটের ব্যবস্থা থাকবে।
- মন্দিরের চারদিকে থাকবে আয়তাকার দেওয়াল। চার দিকে এর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৭৩২ মিটার এবং প্রস্থ হবে ১৪ ফুট।
- পার্কের চার কোণে সূর্য দেবতা, মা ভগবতী, গণপতি এবং ভগবান শিবের চারটি মন্দির তৈরি করা হবে। উত্তর দিকে মা অন্নপূর্ণার মন্দির এবং দক্ষিণে হনুমানজির মন্দির থাকবে।
- মন্দির কমপ্লেক্সে প্রস্তাবিত অন্যান্য মন্দিরগুলি মহর্ষি বাল্মীকি, মহর্ষি বশিষ্ঠ, মহর্ষি বিশ্বামিত্র, মহর্ষি অগস্ত্য, নিষাদরাজ, মাতা শবরী এবং ঋষিপত্নী দেবী অহিল্যাকে উৎসর্গ করা হবে।
- মন্দিরে লোহা ব্যবহার করা হবে না। মাটিতে কোনো কংক্রিট নেই।
- মাটির আর্দ্রতা থেকে মন্দিরকে রক্ষা করার জন্য গ্রানাইট দিয়ে ২১ ফুট উঁচু প্লিন্থ তৈরি করা হয়েছে।
- মন্দির কমপ্লেক্সে নর্দমা, জল শোধনাগার, অগ্নিনির্বাপণের জন্য জলের ব্যবস্থা এবং নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
- ২৫ হাজার ধারণ ক্ষমতা যুক্ত একটি পিলগ্রিমস ফ্যাসিলিটি সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে তীর্থযাত্রীদের লাগেজ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার জন্য লকার থাকবে।
- মন্দির চত্বরে বাথরুম, টয়লেট, ওয়াশ বেসিন, খোলা কল ইত্যাদির সুবিধাও থাকবে।
মন্দিরটি সম্পূর্ণরূপে ভারতীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত হচ্ছে। পরিবেশ-জল সংরক্ষণে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। মোট ৭০ একর জমির মধ্যে ৭০ শতাংশ এলাকা সবসময় সবুজ থাকবে।
এছাড়াও, মহারাষ্ট্রের বালারশাহ এবং আল্লাপল্লী বনাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা সেগুন কাঠ মন্দিরের ৪৪ টি দরজায় ব্যবহার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৪টি সোনার প্রলেপের কাজ থাকবে।
৪৬০ জন ইঞ্জিনিয়ার সহ চার হাজারের বেশি শ্রমিক, মন্দিরের নিচতলাকে প্রস্তুত করার জন্য চব্বিশ ঘন্টা কাজ করছেন।