চলতি মাসেই অযোধ্যা জমি মামলার রায় দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত সেই মামলার রায় নিয়ে সতর্ক বিজেপি। রায় নিয়ে 'অবিবেচক ও উস্কানিমূলক' মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। দল ও শাখা সংগঠনের নেতাদের সতর্ক করল গেরুয়া শিবির। আচরণবিধির কথা ইতিমধ্যেই বৈঠক করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে। বলা হয়েছে, অযোধ্যা রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কথা না বলা পর্যন্ত দের কেউ কোনও মন্তব্য করতে পারবে না।
গত সোমবার, দিল্লিতে বিজেপি কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডা দলের সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই আচরণবিধির কথা পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কলকাতা, বেঙ্গালুরু ও মুম্বাইতে বৈঠক করে দেশের সব প্রান্তের দলীয় কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পদ্ম শিবিরের এক শীর্ষ নেতার কথায়, 'অযোধ্যা রায়ের দিন দলের আচরণবিধি নিয়ে সজাগ করা হয়েছে। মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী বলা পর কথা বলতে পারবেন। আর দলের তরফে অমিত শাহের বলা পর কর্মকর্তাদের কথা বলতে বলা হয়েছে।'
অযোধ্যা রায় নিয়ে সতর্ক বিজেপি। দেশের শাসন ক্ষমতায় থাকায় তা আরও তীব্র হয়েছে। দল চাইছে না বহু বিতর্কিত মামলায় রায় নিয়ে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তির মন্তব্যে উত্তেজনা তৈরি হোক। তাই আচরণবিধি জারি করে বিষয়টির গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে দলীয় নেতাদের। বিজেপি নেতার কথায়, 'অযোধ্যা বিচারাধীন বিষয়। তাই এনিয়ে চর্চার কোনও প্রয়োজন নেই।'
আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: অযোধ্যা মামলায় মোড়- কাকে বলে ওয়াকফ?
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, অযোধ্যা মামলায় কোর্ট যা রায় দেবে তা সকলের মেনে নেওয়া উচিত। তারপরই মোদী দ্বিতীয়বারের জন্য বিপুল ক্ষমতা নিয়ে সরকারে আসে। জানা গিয়েছে, তখন থেকেই রায়ের পরিণতি ঘিরে সতর্ক কেন্দ্রীয় শাসক দল। আরএসএসের পক্ষ থেকেও শীর্ষ কর্মকর্তাদের আগামী ১০ থেকে ২০ নভেম্বরের সংগঠনের সব প্রচার বৈঠক বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সময় কর্মকর্তারা সংগঠনের হেড অফিস বা আঞ্চলিক অফিসে থাকবেন। গত সপ্তাহেই এক বিবৃতিতে সঙ্ঘের তরফে বলা হয়, অযোধ্যা জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় খোলা মনে সবাইকে মানতে হবে।
২৭ অক্টোবর 'মন কি বাতে' প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, '২০১০ সালে যখন এলাহাবাদ হাইকোর্ট রাম জন্মভূমি নিয়ে রায় শুনিয়েছিল, সেই দিনগুলিকে এক বার স্মরণ করুন। রায়ের আগে কোথা কোথা থেকে লোক চলে এসেছিল। বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থসিদ্ধার জন্য উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছিল। পরিবেশ উত্তপ্ত করার জন্য কি কি ধরনের ভাষা বলা হচ্ছিল। কিছু বাক্যবাগীশ কী কী সব দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলেছিল, আমাদের সব মনে আছে। এটা সাত থেকে ১০ দিন চলেছিল। কিন্তু যেই রায় হল, এক আশ্চর্য ও আনন্দদায়ক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সরকার, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিদ্বজ্জনরা অত্যন্ত সাবধানী ও পরিণত বক্তব্য পেশ করেছিলেন। আদালতের রায়কে অত্যন্ত গৌরবপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন দেশবাসী এবং কোথাও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হতে দেননি।'
Read the full story in English