Advertisment

আজানে ধ্বনিতে উপাচার্যের ঘুমে ব্যাঘাত-দিনভর মাথাব্যথা! প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে জেলাশাসককে চিঠি

ভোরে মাইকে আজানের সুরে ক্ষুব্ধ এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সঙ্গীতা শ্রীবাস্তব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ভোরে মাইকে আজানের সুরে ক্ষুব্ধ এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সঙ্গীতা শ্রীবাস্তব। জোরে মাইকে আজানের সুরে উপাচার্যের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে, মাথাব্যথা হয়। ফলে সারা দিন কাজে ক্ষতি হয় বলে অভিযোগ করেছেন উপাচার্য। আজানের জন্য মাইক ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই প্রয়াগরাজের জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন সঙ্গীতাদেবী। প্রশাসনের তরফে জলদি পদক্ষেপের দাবি করেছেন তিনি।

Advertisment

গত ৩রা মার্চ প্রয়াগরাজের জেলাশাসক ভানু চন্দ্র গোস্বামীকে লেখা চিঠিতে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের উপাচার্য সঙ্গীতা শ্রীবাস্তব লিখেছেন, 'আমার বাড়ির কাছের মসজিদ থেকে প্রতিদিন ভোর সাড়ে পাঁচটার সময় মাইকে প্রচণ্ড জোরে মৌলবীর দেওয়া আজানের সুর ভেসে আসে। যা অত্যন্ত বিরক্তিকর। ঘুম ভেঙে যায়। পরে অনেক চেষ্টা করলেও আর ঘুম আসে না। ফলে মাথা ব্যথা হয়। যা কাজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ব্যাঘাত ঘটায়।' চিঠির প্রতিলিপি প্রয়াগরাজের দূষণ নিন্ত্রণ পর্যদকেও পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ, 'একজনের নাকে স্পর্শ করার আগে পর্যন্ত কারোর স্বাধীনতা বহাল থাকে। আমি কোনও ধর্ম, বর্ণ বা জাতির বিরুদ্ধে নই। ভোরে আজানের সময় মাইক ব্যাবহার না করলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। রমজানের সময় ভোর চারটে থেকে মসজিদের মাইকে যেভাবে ঘোষণা শুরু হয়ে যায়, তাতে এলাকার মানুষদের অসুবিধা হয়। ভারতের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ এবং সকল সম্প্রদায়ের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বলেছে, যার চর্চা প্রয়োজন।'

চিঠিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টর একটি জনস্বার্থ মামলার উল্লেখ করেছেন এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের উপাচার্য সঙ্গীতা শ্রীবাস্তব। গত বছর মাইকে আজান সম্পর্কিত একটি মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানায়, 'আজান ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য অঙ্গ। কিন্তু, লাউডস্পিকার ও অন্যান্য যন্ত্রের সাহায্যে আজান দেয়া কখনো ধর্মের অখণ্ড অংশ হতে পারে না। মাইকে আজান না দিতে দিতে দেওয়ার বিষয়টি সংবিধানে বর্ণিত ২৫ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করে না। শব্দদূষণমুক্ত ঘুমের অধিকার জীবনের মৌলিক অধিকারের অংশ। মানুষের কণ্ঠে মসজিদ থেকে আজান দেয়া যায়। কারোরই নিজের মৌলিক অধিকারের জন্য অন্যের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করার অধিকার নেই।'

উপাচার্য তাঁর চিঠির প্রেক্ষিতে প্রশাসনের থেকে দ্রুত প্রতিক্রিয়ার আর্জি জানিয়েছেন। তাড়স্বরে মাইকে আজান বন্ধে প্রসাসন পদক্ষেপ করবে বলে আসা প্রকাশ করেছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে প্রয়াগরাজের আইজি কাবিন্দ্র প্রতাপ সিং বলেছেন, 'উপাচার্যের দেওয়া চিঠি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপর প্রয়োজনে পদক্ষেপ করা হবে। রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কেউ লাউড স্পিকার ব্যবহার করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে।' একই সঙ্গে আইজি-র কথায়, 'উপাচার্য আজানের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু নির্ধারিত ডেসিবেলের উপরে আওয়াজের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন। সবটাই দেখা হচ্ছে।' প্রয়াগরাজের ডিভিশনাল কমিশনারও উপাচার্যের চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন। ৪টা মার্চ জেলাশাসককে
উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন প্রয়াগরাজ পুলিশের ডিভিশনাল কমিশনার।

এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সঙ্গীতা শ্রীবাস্তবের অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন মৌলানা খালিদ রশিদ ফিরাঙ্গি মাহালি। তিনি বলেছেন, 'উনি নিশ্চই জানেন যে আমাদের দেশ ধর্ম নিরপেক্ষ। বাতাসে যেমন আজানের সুর ভেসে আসে, তেমনই মুখোরিত হয় কীর্তণ-ভজনের বোল। যুগের পর যুগ এই প্রথায় এতে কোরোর অসুবিধা হয় না। উপাচার্যের দাবি ভিত্তিহীন। হাইকোর্টের রায় মেনেই আজানে মাইক ব্যবহার হয়। দেশবাসীর কাছে আমার আবেদন, একে অন্যের ধর্মের প্রতি সমামন বজায় রাখুন ও অযথা এই বিষয়ে বিতর্ক বাড়াবেন না।'

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

national news Allahabad
Advertisment