CDS Bipin Rawat Killed: কপ্টার দুর্ঘটনার ৪ ঘণ্টা আগে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন ল্যান্সনায়েক বি সাই তেজা। অন্ধ্র প্রদেশে চিত্তুরে থাকে মৃত এই সেনাকর্মীর পরিবার। বুধবার সকালেই ভিডিও কোলে সাই তেজার সঙ্গে কথা হয় তাঁর স্ত্রীয়ের। আর সেদিন সন্ধ্যার মধ্যেই দুঃসংবাদ পৌঁছয় ল্যান্সনায়েকের চিত্তুরের বাড়িতে। জানা গিয়েছে, মৃত সেনাকর্মীর পরিবার স্ত্রী, দুই শিশু সন্তান ছাড়াও রয়েছেন বাবা-মা।
সন্তান বিয়োগের যন্ত্রণা বুকে চেপেই ল্যান্সনায়েকের বাবা বি মোহন বলেন, ‘২০১২ সালে বড় ছেলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। গুন্টুরে সেনাবাহিনীতে যোগদান শিবির থেকেই ডাক পেয়েছিলেন সাই তেজা। চলতি বছর মে মাস থেকে সিডিএস বিপিন রাওয়াতের পিএসও বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হয় তাঁকে।‘
বি মোহন আরও জানান, ছোট থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগদান ছিল সাই তেজার স্বপ্ন। দশম শ্রেণির পর থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দেয় ছেলে। প্রতিদিন ১০ কিমি দৌড়ত। এমনকি, ছুটিতে বাড়িতে এসেও শরীর চর্চা নিয়ে পড়ে থাকত ছেলে। শিশু বয়সে ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিল। জেলাস্তরে বেশ কয়েকটি টুর্নামেন্ট খেলেছে সাই।
জানা গিয়েছে, সাই তেজার ছোট ভাই বি মহেশও সেনাবাহিনীতে কর্মরত। চলতি বছর সেপ্টেম্বরে শেষবার বাড়ি এসেছিল এই ল্যান্সনায়েক। নতুন বছরে ফের একবার আসার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন অন্ধ্র প্রদেশের বীর সন্তানের নিথর দেহই চিরকালের মতো ফিরবে চিত্তুরে। এমনটাই জানান পড়শিরা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই দিল্লি আনা হবে কপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত সেনাকর্তা বিপিন রাওয়াত এবং তাঁর স্ত্রীয়ের দেহ। পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। বুধবার সংসদকে এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। এদিন রাজনাথ সিং দুর্ঘটনার বিবরণ সংসদকে অবগত করেন। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে এই দুর্ঘটনার তদন্ত হবে বলেও জানান তিনি। শুক্রবার সকাল থেকে শেষ শ্রদ্ধার জন্য সিডিএস বিপিন রাওয়াতের বাসভবনেই রাখা থাকবে দেহ। এমনটাই সেনা সূত্রে খবর।
কুন্নুরে সেনা চপার দুর্ঘটনা ও তাতে সস্ত্রীক দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত সহ ১৩ জনের মৃত্যু নিয়ে সংসদের উভয়কক্ষে বিবৃতি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে ত্রিস্তরীয় তদন্ত হবে জানিয়েছেন রাজনাথ সিং।
বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শুরুতেই লোকসভায় এমআই-১৭ চপার দুর্ঘটনা নিয়ে বিবৃতি দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘চপার দুর্ঘটনায় ১৪ জনের মধ্যে সস্ত্রীক চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ-সহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা দুর্ভাগ্যজনক। সেনার হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংয়ের। লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন তিনি। দ্রুত তাঁর আরোগ্য কামনা করছি। প্রয়োজনে তাঁকে অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিথসা হবে। নিহতদের দেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে বায়ুসেনার বিমানে দিল্লিতে আনা হবে। তারপর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য পালিত হবে।’প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, চপার দুর্ঘটনার সত্য উদঘাটনে ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে ত্রিস্তরীয় যে তদন্ত হবে তার নেতৃত্বে থাকবেন এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিং। পরে রাজ্যসভাতেও একই ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছেন রাজনাথ সিং।
বুধবারই কুন্নুর পৌঁছে গিয়েছিল তদন্তকারীরা। শুরু করে তদন্ত। জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে দুর্ঠনাস্থলের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দুর্ঘনাগ্রস্ত এমআই-১৭ চপারের ব্ল্যাক বক্স। কেন দুর্ঘটনা ঘটেছে তা এই ব্ল্যাক বক্স থেকে বোঝার চেষ্টা করা হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন