হু হু করে বেড়ে চলেছে দেশের করোনা সংক্রমণ। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অ্যাকটিভ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃতের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়েছে ১ লক্ষ। সেই সঙ্গে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৮১৯ জন। যা গতকালের থেকে অনেকটা বেশি। পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের।
নয়া করোনা ঢেউয়ের আতঙ্কে তোলপাড় দেশ। ইতিমধ্যেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বিশ্বের ১১০ টি দেশে নতুন করে করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। এই বাড়বাড়ন্তের জন্য ওমিক্রন সাব-ভেরিয়েন্ট BA.4 এবং BA.5 এর দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়াকেই দায়ি করেছে হু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও মোট সংক্রমণের অর্ধেক এই দুই প্রজাতির জন্য দায়ী। হু’র তথ্য অনুসারে ২৫ জুন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে BA.5 ভ্যারিয়েন্ট ৩৬.৬ শতাংশ এবং BA.4 ভ্যারিয়েন্ট ১৫.৭ শতাংশ সংক্রমণের জন্য দায়ি।
অর্থাৎ দেশের মোট সংক্রমণের ৫২ শতাংশের জন্য দায়ী এই দুই নয়া ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এছাড়াও হু জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ গত কয়েকদিনে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে কী করে বুঝবেন আপনি এই নয়া ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন করোনা টিকা নেওয়ার পরেও কেউ যদি এই ভাইরাসের নয়া প্রজাতিতে আক্রান্ত হন তবে তাঁর শরীরে সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি ঠাণ্ডা লাগার মত উপসর্গ দেখা দেবে। তবে স্বাদ অথবা গন্ধ চলে যাওয়ার মত উপসর্গ নয়া এই ভ্যারিয়েন্টের হানায় দেখা যাচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে দুর্বলতা, হাতে-পায়ে ব্যথা, এমনকী পেট খারাপের মত উপসর্গও দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: <
এবিষয়ে মাইক্রোবায়োলজিস্ট ভাস্কর নারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চ জ্বর, কাশি, ক্লান্তি, নাক দিয়ে জল পড়া যার স্থায়িত্ব দু থেকে তিন দিন তারপরই হটাত করেই কমে যাবে এই উপসর্গগুলি তবে দুর্বলতা বেশ কিছু স্থায়ী হতে পারে। তবে অক্সিজেন স্যাচুরেশনে পড়ে যাওয়া অথবা ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ BA.5 ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে বিরল”। এএমআরআই হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজিস্ট শেলি শর্মা গাঙ্গুলী বলেছেন, ‘করোনা টিকা এবং শরীরের নিজস্ব ইমিউনিটি ক্ষমতা নয়া এই ভ্যারিয়েন্টকে আটকাতে সক্ষম। তিনি বলেছেন নয়া এই ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার মত প্রভাব সৃষ্টি করবে না’। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল চৌধুরী বলেছেন, “শিশুদের শরীরে ইতিমধ্যেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে ফলে নয়া এই ভ্যারিয়েন্টে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে”।