অযোধ্যার বিতর্কিত জমি মামলার রায় হয়েছে। কিন্তু, ৯২-এ বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় এখনও বাকি। মনে করা হচ্ছে, আগামী বছর এপ্রিলে লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত বাবরি ধ্বংস মামলার রায় দিতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিচারপতি এস কে যাদবের কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরেই অবসরের কথা ছিল তাঁর। গত জুলাইতেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, আগামী ন'মাসের মধ্যে বাবরি ধ্বংস মামলার রায় দিতে হবে বিচারপতি এস কে যাদবকে।
বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় অভিযুক্ত লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতী, কল্যান সিং, সাক্ষী মহারাজ, ব্রিজ ভূষণ সিং সহ বিজেপি ও আরএসএসের বহু নেতা। ইতিমধ্যে তাঁরা বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী কে কে মিশ্রার কথায়, 'প্রায় হাজার জন প্রত্যদর্শীর মধ্যে ৩৪৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার চলছে।'
আরও পড়ুন: মসজিদের জন্য বরাদ্দ জমি গ্রহণ: ২৬ নভেম্বর সিদ্ধান্ত
১৯৯২ সালের ৬-ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদে ধ্বংসলীলা চলে। তারপর দুটি মামলা হয়। একটি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিরুদ্ধে, অন্যটি ধ্বংসলীলায় উস্কানি দেওয়ার বিরুদ্ধে। এছাড়া এ-সংক্রান্ত ৪৭টি মামলা দায়ের হয় দেশের বিভিন্ন আদালতে। পরে সেই মামলাগুলিকে মূল দুটি মামলার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। মূল দুটি মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় পৃথক দুই আদালতে। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিরুদ্ধের মামলাটি হয় লখনউ আদালতে। অন্যটি চলে রায়বেরেলি আদালতে।
লখনউ আদালতে ২২ অভিযুক্ত ব্য়ক্তি বিচারের মুখোমুখি হন। পরে এক জনের মৃত্যু হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, পরবন পান্ডে, ব্রীজ ভূষণ সিং, আর এন শ্রীবাস্তব, সাক্ষী মহারাজ, লাল্লু সিংরা। আর এন শ্রীবাস্তব ছিলেন সেই সময়কার ফৈজাবাদের জেলাশাসক। অন্যদিকে, গিরিরাজ কিশোর ও অশোক সিঙ্ঘলের মৃত্যুর পর রায়বেরেলি কোর্টে ৬ জন অভিযুক্ত বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম হলেন এল কে আদবানি, মুরলী মনোহর যোশী, বিনয় কাঠিহার, রিতম্ভরা ও উমা ভারতী।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা রায়ে আমি স্বীকৃতি পেলাম: এল কে আডবানি
২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল লখনউ ও রায়বেরেলি কোর্টে চলা দুটি মামলা একত্রিত করে লখনউয়ে বিশেষ আদালতে শুনানির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়া বলা হয়, হাইকোর্টের নির্দেশে এি মামলা থেকে যে ১৩ জন অভিযুক্তকে মুক্ত করা হয়েছিল তাদেরও ফের মামলার অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এই ছয় অভিযুক্ত হলেন, রাম বিলাস বেদন্তী, চম্পাত রায়, মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস, মহন্ত ধর্ম দাশ, সতীশ প্রধান ও কল্যাণ সিং। এরই মধ্যে চলতি বছর সেপ্টেম্বরে অন্যতম অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং রাজস্থানের রাজ্যপাল পদের মেয়াদ শেষ করে আদালতের মুখোমুখি হন। তাঁর জামমিন মঞ্জুর করা হয়।
বর্তমানে বিশেষ আদালতে এই মামলায় প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য প্রমাণের কাজ চলছে। তা শেষ হলেই সিআরপিসি ৩১৩ ধারায় অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে।
Read the full story in English