অযোধ্যার রামমন্দিরের ভূমিপুজোর দিনই বাবরি মসজিদ বিতর্ক ফের সামনে এল। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল'বোর্ড (এআইএমপিএলবি) মঙ্গলবারই একটি টুইটে জানায়, "বাবরি অতীতে মসজিদই ছিল, আর মসজিদই থাকবে। হাজিয়া সোফিয়ার ঘটনাই এর প্রকৃত উদাহরণ। অন্যায়ভাবে জমির দখল, নিষ্ঠুর, লজ্জাজনক এবং সংখ্যাগুরুকে তোষণ করা রায় কখনো এর (বাবরি মজজিদের) মর্যাদা কেড়ে নিতে পারে না। মন খারাপ করার দরকার নেই। পরিস্থিতি চিরস্থায়ী হয় না।"
এআইএমপিএলবি এদিন একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মসজিদের মধ্যে একটা মূর্তি রেখে দিলেই, মসজিদ আর মসজিদ থাকে না, এমনটা নয়। আরও জানানো হয়, "আজ অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জমিতে একটি মন্দিরের শিলান্যাস হয়েছে। এআইএমপিএলবি মনে করছে এ মুহূর্তে এই বিষয়ে তাদের ঐতিহাসিক অবস্থান পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ইসলামি শরিয়া অনুসারে, মসজিদ একবার যেখানে স্থাপিত হয়, সেখানেই তা চিরকাল ধরে থেকে যায়"।
সুপ্রিম নির্দেশ মানতে বাধ্য হলেও তা মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারি মৌলানা মহম্মদ ওয়ালি রহমানি। তিনি বলেন, "আমাদের বরাবরের বক্তব্য, বাবরি মসজিদ কোনো মন্দির বা হিন্দু উপাসনার স্থান ধ্বংস করে গড়ে ওঠেনি। সুপ্রিমকোর্টও আমাদের এই অবস্থানকে মান্যতা দিয়েছে...সুপ্রিম কোর্ট সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে ১৯৪৯ সালের ২২ ডিসেম্বর রাতেও (গর্ভগৃহে মূর্তি ততক্ষণে রেখে আসা হয়ে গিয়েছে) মসজিদে নমাজ পাঠ হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এও মেনে নিয়েছে যে মসজিদে মূর্তি রেখে আসা...একটি বেআইনি কাজ। রায়ে এ কথাও স্বীকার করা হয় যে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে এবং অপরাধ হয়েছিল। এটা বাস্তবিকই খুব দুর্ভাগ্যের যে সব কিছু মেনে নেওয়ার পরও শীর্ষ আদালত একটি অত্যন্ত অন্যায্য রায় দিয়ে মসজিদের জমিটি তাদের হাতে তুলে দিল যারা একদিন অন্যায়ভাবে বাবরি ধ্বংস করেছিল"। রহমানি আরো বলেন, "এই দেশে দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টই বিচারের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান, তাই আমাদের মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। তবু নিশ্চতভাবে বলব, এটা একটা অন্যায্য রায়।"
বোর্ডের সদস্য মুফতি এজাজ আরশাদ বলেন, "যা হয়েছে তা চরম অবিচার। আমাদের কাছে এটা চিরকাল মসজিদই থাকবে, বাবরি আমাদের হৃদয়ে। ওখানে আমরা ৫০০ বছর ধরে নমাজ পড়েছি, তাই হঠাৎ করে আর তা মসজিদ নয়, এমনটা হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া হাজিয়া সোফিয়ার (ইস্তানবুলে) উদাহরণটি খুবই উপযুক্ত, সেখানে এক সময় নমাজ পড়া হত। আমরা এখন সেই আশাতেই রইলাম..."
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন