শনিবার গভীর রাতে বাগরি মার্কেটে আগুন লেগেছিল। বাগরি মার্কেটের ভিতরে বিভিন্ন পকেটের আগুন নেভাতে এখনও ব্যস্ত দমকল কর্মীরা। বিল্ডিংয়ের জায়গায় জায়গায় ফাটল স্পষ্ট। বুধবারও তিন প্রধান অভিযুক্তের হদিশ পেল না কলকাতা পুলিশ। বাগরি পরিবারের ভেতরকার শরিকি বিবাদের কথা প্রকাশ্যে আসার পর আগুন নিয়ে রহস্য আরও বেড়ে গিয়েছে। বাগরি মার্কেটে বা আশপাশে সিসিটিভি কেন ছিল না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। আদৌ আগুন রহস্যের কোনও কিনারা হবে কী না, তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে।
আগুন নেভাতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে দমকল কর্মীদের। কিন্তু কীভাবে বাগরি মার্কেটে আগুন লেগেছে তা নিয়ে এখনও ধন্দ কাটেনি পুলিশ বা দমকল কর্তাদের। ব্যবসায়ীদের একাংশ ঘটনার দিন থেকে বলে আসছেন যে তিনতলায় আগুন লেগেছিল। তারপর ডালায় আগুন ধরিয়ে চোখে ধূলো দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ঘটনা যাই হোক, এফআইআর করার পরও তিনজনের খোঁজ নেই।
প্রথম প্রশ্ন, মূল অভিযুক্ত রাধা বাগরি কোথায়? ওই প্রশ্ন এখন বড়বাজারের অলিতে গলিতে। রাধা বাগরির দাপট নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বিমত নেই। কিন্তু আগুন লাগার চারদিন পরও তাঁর কোনও খোঁজ নেই কেন? বালিগঞ্জের বাড়িতে রাধা দেবী নেই। এমনটাই দাবি বাড়ির পরিচারিকার। তিনি কি কলকাতা ছেড়ে অন্যত্র গা-ঢাকা দিয়েছেন? নাকি কলকাতাতেই আত্মগোপন করে রয়েছেন? ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে, কলকাতায়ও লুকিয়ে থাকতে পারেন। রফা হলেই বেরিয়ে পড়বেন। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরা দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন। পুলিশের এক সূত্রের খবর, কলকাতাতেই আছেন বাকি দুই অভিযুক্ত, বরুণ বাগরি ও সিইও কৃষ্ণকুমার কোঠারিও।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, জার্মানী সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় থাকলে নিশ্চিত ভাবেই বাগরি মার্কেট পরিদর্শনে যেতেন। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তদের চাপও অনেক বেড়ে যেত। আইনি পদ্ধতিতে কি ভাবে মোকাবিলা করা যায়, এখন গা-ঢাকা দিয়ে সেই চেষ্টাই করছেন অভিযুক্তরা।
বাগরির এক ব্যবসায়ী দেবব্রত দাস জানান, আগে এই বাজারে সিসিটিভি ছিল। তারপর বহুদিন নেই। তাঁর আক্ষেপ, "না থাকলে আর কী করা যাবে।" ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অনেক আগে এজরা স্ট্রিটের দিকেও রাস্তার পোস্টে একটি সিসিটিভি ছিল। সেটাও আর নেই। অন্যদিকে যে ফুটেজকে সিসিটিভির ছবি বলা হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমের একাংশে, পুলিশের মতে সেটা দেখে কিছুতেই সিসিটিভির ফুটেজ বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, এই ছবিতে জুম করা হয়েছে। যা সিসিটিভিতে সম্ভব নয়।তবে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে সব কিছু খতিয়ে দেখছে।
এই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে দুজন ছুটছে বা বাইকে দুজন দ্রুত চলে যাচ্ছে, তার কারণ পুলিশ অনুসন্ধান করছে। তবে ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে, সিসিটিভি থাকা উচিত ছিল এলাকায়। বড়বাজার যে ভাবে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠছে, খুব স্বাভাবিকভাবেই বাজার কর্তৃপক্ষের সিসিটিভি বসানো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন তাঁরা।