৬১ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও কার্যত সেই একই ছবি বাগরি মার্কেটে। এখনও বাগরির জানলা দিয়ে গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। অবশেষে, ঘটনার প্রায় আড়াই দিন পর, বাগরি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল দমকল বাহিনী। রাধা বাগরি-সহ বাগরি মার্কেটের দুই মালিকের বিরুদ্ধে বড়বাজার থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন দমকলের ডিজি জগমোহন। তবে শুধু এই দু’জনই নন, সিইও কৃষ্ণকুমার কোঠারির নামেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। বাগরি অগ্নিকাণ্ডে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করা হবে, তা এদিন দুপুরেই জানিয়েছিলেন ডিজি।
এদিকে, বাগরি অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। বহু ব্যবসায়ীই রাধা বাগরির নাম করে আওয়াজ তুলেছিলেন। ‘‘রাধা বাগরি কোথায়?’’ ক্ষোভের সঙ্গে এ প্রশ্নে সোচ্চার হয়েছিলেন বাগরি মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ী। বাগরিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই রাধা বাগরিদের হদিশ নেই বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, ঘটনার পরই রাধা বাগরিরা পালিয়ে গিয়েছেন।
বাগরি বিল্ডিংয়ের ভেতরের অবস্থা। এখনও চলছে আগুন নেভানোর কাজ। #BagriMarketFire pic.twitter.com/l2Bvc54OIK
— IE Bangla (@ieBangla) September 18, 2018
অন্যদিকে, বাগরির আগুন আড়াই দিন পরও বাগে না আসা নিয়ে সরব হয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। এদিন দলের প্রধান কার্যালয় আলিমুদ্দিন স্ট্রীটে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘বাম আমলে আগুন লাগলে তো কুটকাচালি করা হত। আমরা কিন্তু তা করছি না।’’ এরপরই বিমানবাবু বলেন, ‘‘দমকল পারছে না, দমকল যদি না পারে, সেনাকে বলতে হবে। দমকল তো অসাধ্য সাধন করেছে। টানা কাজ করে চলেছেন ওঁরা, এরপর তো অসুস্থ হয়ে যাবেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যখন দেখা গেল, সামলানো গেল না, তখনই সেনাকে বলা উচিত ছিল।’’
আরও পড়ুন,আজও ধোঁয়ায় ঢাকা বাগরি, প্রায় ৬০ ঘণ্টা পার
বাগরির আগুন নেভাতে সেনা ডাকা প্রসঙ্গে বিদেশ সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে এদিন কটাক্ষের সুরে বিমানবাবু বলেন, ‘‘কে ডাকবেন সেনা? যিনি ডাকবেন তিনি তো নেই এখন।’’ বাগরি অগ্নিকাণ্ডে সেনার সাহায্য নেওয়ার দাবি জানিয়ে সরব হয়েছিলেন ব্যবসায়ীদের একাংশও। ঘটনার পরের দিন থেকেই পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে সেনা ডাকা নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন বাগরির ব্যবসায়ীদের অনেকে। আগুন নেভাতে গিয়ে দমকল বাহিনীর হিমশিম অবস্থা দেখে অনেক ব্যবসায়ীই বলেছিলেন, ‘‘দমকল তো পারছেই না, সেনাকে নামানো হোক।’’
মঙ্গলবার সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও, বাগরির জানলা দিয়ে ধোঁয়া বেরোনো বন্ধ হয়নি। সেই একই ছবি বারবার ধরা পড়ছে। আগুন আয়ত্তে আনতে বাগরির জানলা, শাটার ভেঙে ভিতরে ঢুকেছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। বাগরির ভিতরে তাপ বেশি থাকায় সমস্যাও হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে এখনও জোরকদমে চলছে আগুন নেভানোর কাজ। কিন্তু সকলের প্রশ্ন একটাই, কবে নিভবে এ আগুন?