করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন দেশে যখন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলাকে 'জরুরী' হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানি করা হচ্ছে তখন আটকে রাষ্ট্রদোহে আটক ব্যক্তিদের জামিনের আবেদন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর মতো গুরুতর অভিযোগ ও কড়া বেআইনী ক্রিয়াকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ)-এ জড়িত মামলায় বেশ কয়েকটি জামিনের আবেদন এখন লকডাউনে লক।
করোনা পূর্ববর্তী সময়ে নাগরিকপঞ্জি, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে উত্তাল ছিল দেশ। সেই সময় যারা কেন্দ্রীয় সরকারের এই আইনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন তাঁদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় আটক করা হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে ১৯ বছরের অমূল্যা লিওনা থেকে কাশ্মীরি তিন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া, এমনকী আসামের অ্যাক্টিভিস্ট অখিল গগৈকে এই আইনের আওতায় আটক করা হয় ডিসেম্বরের ১২ তারিখ। তবে এখনও আদালত এই মামলাগুলিকে "জরুরি" হিসাবে অগ্রাধিকার দেয়নি। সুতরাং তাঁদের জামিনের আবেদনের শুনানিও হয়নি।
আরও পড়ুন: বিশ্বে সংক্রমিত করোনার জিনোম কাঠামোর মিল পাওয়া গেল ভারতে
এদিকে ১২ এপ্রিল অমূল্যা লিওনার চাওয়া জামিনের আবেদনের জবাবে বেঙ্গালুরু আদালতের এক আধিকারিক ইমেলে লেখেন, 'এখনও চূড়ান্ত জরুরী অবস্থা তৈরি হয়নি।' উল্লেখ্য, সিএএ-এর বিরুদ্ধে প্রচারের সময় একটি জনসমাবেশে 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান দেওয়ায় অমূল্যাকে ভারতীয় দন্ডবিধির ১২৪ ধারা অনুযায়ী আটক করে বেঙ্গালুরু পুলিশ। এরপর এপ্রিল মাসে নগরদায়রা আদালতে জামিনের আবেদন করা হলেও সেখানে শুনানি হয়নি। তারপর কর্ণাটক হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন অমূল্যা। কিন্তু সেখানেও তাঁর মামলার বিস্তারিত শুনানি হয়নি। সোমবার, তিন মাস জেলে কাটানোর পর সোমবার অমূল্যা আবারও দায়রা আদালতে তাঁর জামিনের আবেদনটি স্থানান্তর করার আবেদন করেন বেঙ্গালুরু আদালতে।
যেহেতু দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশব্যাপী লকডাউন শুরু হয়েছে তাই আদালত কেবলমাত্র "জরুরি" মামলার শুনানি করছে। আইনজীবীদের শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে মামলা করার কথা জানান হয়েছে আদালতের তরফে। তবে অমূল্যার আইনজীবী আর প্রসন্নর চিঠিতে মোটেও খুশি নন দায়রা আদালতের বিচারক। চিঠিতে লেখা হয়েছিল, "আবেদনকারী ১৯ বছরের একটি মেয়ে। এটা তাঁর জীবন ও স্বাধীনতার একটি বিষয়।"
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলাদের প্লাসেন্টায় তৈরি হচ্ছে ক্ষত, রিপোর্টে বাড়ছে উদ্বেগ
তবে এখনও "জরুরী" মামলা কোনগুলি তাঁর সুনির্দিষ্ট তালিকা না থাকলেও, আদালত প্রায়শই এমন মামলাগুলিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে যেখানে জীবন ও স্বাধীনতার প্রশ্ন তোলা হয়। কারণ পরবর্তীতে যেন তা ক্ষতির কারণ না হতে পারে আবেদনকারীর জন্য। মৃত্যুদণ্ড, জামিন ও উচ্ছেদের ক্ষেত্রেও জরুরি শুনানি করা হয়।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন