নবরাত্রিটা ভালো কাটল না। গুজরাটের সুরাটে গরবার আসরে লাঠিসোটা নিয়ে ঢুকে পড়ল বজরং দলের কর্মীরা। বেধড়ক মারধর করল বাউন্সারদের। হামলায় দুই বাউন্সার গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, ওই বাউন্সারদের অবস্থা মোটের ওপর স্থিতিশীল।
সুরাটের ভিআইপি রোডে ঠাকোরজি ওয়াদি এলাকায় ওই গরবা নাচের আসর বসেছিল। প্রতিবারই নবরাত্রিতে এই আসর বসে ওই এলাকায়। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ওই বজরং দলের কর্মীরা জোর করে গরবার আসরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। তখনই তাঁদের সঙ্গে হিন্দু সংগঠনটির কর্মীদের বচসা শুরু হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাউন্সাররা বজরং দলের কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে, উলটে বাউন্সারদেরই মারধর করেন বজরং দলের লোকজন। তাঁদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি ছিল বলেই অভিযোগ করেছেন উদ্যোক্তারা।
হামলার মুখে বাকি বাউন্সাররা ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় বলেই জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। এরপরই নাচের আসরের সুর কেটে যায়। ঘটনার সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন জড়িত থাকায় তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর সাহস পাননি। এমনটাই জানিয়েছেন উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধি। কারণ, গুজরাটে দীর্ঘদিন ধরেই গেরুয়া শিবির ক্ষমতায় রয়েছে।
ঘটনাটি সম্পর্কে সুরাট শহরের জোন-৪ এর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সাগর বাগমার জানিয়েছেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল। এরপরই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে বলেই তাঁরা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বাগবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, উদ্যোক্তারা লিখিত অভিযোগ না-জানানোয় তাঁরাও আর বিষয়টি নিয়ে বেশিদূর এগোননি। তবে, ওই নাচের আসরে যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর অনুষ্ঠানও ঘটনার পর থেকেই চলছে বলেই জানিয়েছেন পুলিশকর্তা।
আহত বাউন্সারদের অন্যতম আহমেদ খান জানিয়েছেন, ওই আসরে শতাধিক বাউন্সার উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা একে অপরের চেয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে ছিলেন আর আসর সামলাচ্ছিলেন। বিপুল সংখ্যক বজরং দলের কর্মী নাচের আসরে এসেছিল। তারা এরপর দলবল নিয়ে গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি ছিল।
আরও পড়ুন- পাশে নেই প্রবীণ নেতারা, নবীনদের নিয়েই খাড়গের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াইয়ে থারুর
প্রথমে বজরং দলের কর্মীরা একজন বাউন্সারের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর কাছ থেকে জানতে পারেন, আহমেদ খান মুসলিম বাউন্সার। এরপর তাঁকে একটু দূরে ডেকে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনাস্থলে মোট পাঁচ জন মুসলিম বাউন্সার ছিল। তার মধ্যে তিন জন এই ঘটনার পরই চম্পট দেন বলে আহমেদ খান জানিয়েছেন।
এই ব্যাপারে দক্ষিণ গুজরাটের বজরং দলের নেতা দেবপ্রসাদ দুবে জানিয়েছেন, তাঁরা প্রথমেই উদ্যোক্তাদের মুসলিম বাউন্সার না-আসার ব্যাপারে বলেছিলেন। বজরং দলের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন যে সেখানে মুসলিম বাউন্সাররা রয়েছেন। তাঁদের তাঁরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। কিন্তু, মুসলিম বাউন্সাররা সেকথা না-শুনে তর্ক জুড়ে দেন। উলটে বজরং দলের কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করেন। এরপরই শ'দুয়েক বজরং দলের কর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁরা ওই মুসলিম বাউন্সারদের মারধর করে গরবার আসর থেকে বের করে দেন।
Read full story in English