Advertisment

'বালাকোট হানায় বিস্ফোরকের পরিমাণ ছিল ৭০-৮০ কেজি'

বাণিজ্যিকভাবে প্রাপ্ত স্যাটেলাইট ছবিতে ধ্বংসের যে পরিমাণ দেখা যাচ্ছে, তা বিস্ফোরকের আনুমানিক পরিমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, স্পাইস ২০০০ পিজিএম-এর নিক্ষেপবিন্দু হয় ৯০৭ কেজির।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

পাকিস্তানের বালাকোটে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জৈশ-এ-মহম্মদের মাদ্রাসার ওপর ভারতীয় বায়ুসেনার হানায় প্রতিটি বিমানে ক্ষেপণাস্ত্রের নিক্ষেপবিন্দুতে মোট বিস্ফোরক পরিমাণ (নেট এক্সপ্লোসিভ কোয়ান্টিটি বা NEQ) ছিল মাত্র ৭০-৮০ কেজি টিএনটি। বাণিজ্যিকভাবে প্রাপ্ত স্যাটেলাইট ছবিতে প্রকাশ পাওয়া ধ্বংসের পরিমাণ এবং মাত্রার সম্ভবত ব্যাখ্যা এই অপেক্ষাকৃত কম NEQ।

Advertisment

সেনার এক শীর্ষ আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "প্রতিটি টার্গেটকে কতটা বিস্ফোরক দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রচুর জল্পনা হয়েছে। কিন্তু দিনের শেষে যেটা জরুরি, সেটা হলো নিক্ষেপবিন্দুর নেট এক্সপ্লোসিভ কোয়ান্টিটি বা NEQ। আমাদের ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের NEQ - যদিও সঠিক পরিমাণটা বলা বারণ - ছিল মাত্র ৭০-৮০ কেজি টিএনটি।"

গুলিগোলা বা বিস্ফোরক যাতে প্যাকেটবন্দি করা হয়, সেই প্যাকেজিং সামগ্রীর ওজন এবং কার্তুজ ও তার খোল বাদ দিয়ে মোট যে পরিমান ওজনের বিস্ফোরক মজুত থাকে ক্ষেপণাস্ত্রের নিক্ষেপবিন্দুতে, তাকেই সামরিক পরিভাষায় বলা হয় NEQ।

পূর্ব প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মনে করা হচ্ছে যে মিরাজ-২০০০ বিমান থেকে ইজরায়েলে তৈরি স্পাইস (SPICE) ২০০০ 'প্রিসিশন গাইডেড মিউনিশন' বা পিজিএম নিক্ষেপ করে বায়ুসেনা। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে প্রাপ্ত স্যাটেলাইট ছবিতে ধ্বংসের যে পরিমাণ দেখা যাচ্ছে, তা বিস্ফোরকের আনুমানিক পরিমাণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, স্পাইস ২০০০ পিজিএম-এর নিক্ষেপবিন্দু হয় ৯০৭ কেজির।

"এটা শুধুমাত্র বিস্ফোরকের পরিমাণের প্রশ্ন নয়। এখানে দেখতে হবে নিক্ষেপবিন্দুর ডিজাইন, বিস্ফোরকের চরিত্র, তার সূচনার দিশা, তার খোল এবং বাইরের কভার, এবং বিস্ফোরকের সঙ্গে কী উপাদান মেশানো হচ্ছে। টার্গেটের আকার আয়তন এবং প্রবেশের গতিপথের ওপরেও নির্ভর করে আঘাতের তীব্রতা," জানান ওই সেনা আধিকারিক।

এখন পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনা নিশ্চিত করে নি যে বিমান হানায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির ওপর স্পাইস ২০০০ পিজিএম নিক্ষেপ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় এক সেনা আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "আমরা যে ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছি, এটুকু বলতে পারি যে তা প্রকাশ্যে বলার নয়। প্রিসিশন অস্ত্র ছিল, যা নির্দিষ্ট টার্গেটকেই আঘাত করবে শুধু, আশেপাশে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না ঘটিয়ে। তাই করেছে।"

ওই আধিকারিক আরও বলেন, "এবারের নিশানা ছিল বালাকোট। যদি সেটা মুজফ্ফরাবাদ হতো, যেখানে ঘন জনবসতি রয়েছে এবং যেখানে কোল্যাটারাল ড্যামেজ (সমান্তরাল ক্ষতি) একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়, আমাদের একটি ঘরকে নিশানায় রেখে তার অধিবাসীদের শেষ করতে হতো, পাশের ঘরে একটি আঁচড়ও না কেটে। এই অস্ত্র দিয়ে তাও করা যায়।"

ওই আধিকারিকের মতে, জনসমক্ষে সব তথ্য আনা অতটা জরুরি নয় যতটা জরুরি "শত্রুর জানা যে আমরা যেখানে আঘাত করতে চেয়েছিলাম, সেখানেই করেছি"। উল্লেখ্য, কিছু সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বায়ুসেনার নিক্ষিপ্ত বোমা তাদের নিশানায় না লেগে মাদ্রাসা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে একটি টিলার ওপর কিছু গাছপালা নষ্ট করেছে। এই প্রসঙ্গে ৪ মার্চ এয়ার চিফ মার্শাল বিএস ধানোয়া বলেন, "আমরা যদি মনে করি টার্গেটে মারব, তাহলে টার্গেটেই মারি। তা নাহলে পাকিস্তান প্রতিক্রিয়া দিত কেন? যদি জঙ্গলেই বোমা ফেলতাম, তাহলে প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন হতো না।"

indian air force pakistan Surgical Strike
Advertisment