বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা। করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে রেলের গাফিলতির বিষয়টি প্রথম থেকেই উঠে এসেছে। এর মাঝেই CRS রেলওয়ে বোর্ডের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
২ জুন, ওড়িশার বালেশ্বরের তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক আহত যাত্রীর মৃত্যু হয়।
ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে বানানাগা বাজার স্টেশনে ‘ট্রিপল ট্রেন দুর্ঘটনার’ তদন্তকারী কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটি (CRS) রেলওয়ে বোর্ডের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রেলওয়ে বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রিপোর্টের ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, ২ জুন, বালাসোর জেলায় তিনটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছের ২৮৮। করোমন্ডেল এক্সপ্রেস বাহানাগা বাজার রেলওয়ে স্টেশনের কাছে মেন লাইনের পরিবর্তে পাসিং লুপে প্রবেশ করে এবং একটি দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এর পরে, বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসও উল্টে যাওয়া কোচগুলিতে দ্রুত গতিতে ধাক্কা মারে।
সিআরএস তদন্ত ছাড়াও ট্রেন দুর্ঘটনারও তদন্ত করছে সিবিআই। দুর্ঘটনার পর রেলওয়ে দক্ষিণ পূর্ব রেলের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ট্রেন দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে সিগন্যালিং ব্যবস্থার ত্রুটিকেই দায়ি করা হয়েছে।
সূত্রের খবর ২ জুন দুর্ঘটনার তদন্তে রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার (সিআরএস) তদন্তে দুটি বিভাগের গাফিলতিকে চিহ্নিত করেছে। স্টেশন স্টাফ, সিগন্যালিং এবং অপারেশনস (ট্রাফিক)কে যৌথভাবে দুর্ঘটনার জন্য দায়ি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে,করমন্ডল এক্সপ্রেসকে পাস করার অনুমতি দেওয়ার আগে সিগন্যালিং সিস্টেমের পরীক্ষা করার সিকিউরিটি প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়নি। রিলে রুমেও বেশ কিছু গাফিলতি ধরা পড়েছে তদন্তে। যার দায় সিগন্যালিং স্টাফ এবং স্টেশন মাস্টার কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না।
ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হন এক যাত্রী মনীশ কুমা্র। বৃহস্পতিবার কটকের এসসিবি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মনীশ ছিলেন বিহারের পূর্ব চম্পারন জেলার বাসিন্দা। হাসপাতালের সেন্ট্রাল আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে মণীশের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হওয়ায় মণীশকে ৩ জুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২২ জন আহত যাত্রী এসসিবিএমসিএইচ-এ চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যার মধ্যে পাঁচজন আইসিইউতে এবং ১৭ জন বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। একই সময়ে, ৮১টি মৃতদেহ এখনও তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি, এই মৃতদেহগুলি ভুবনেশ্বর AIIMS-এ সংরক্ষণ করা হয়েছে। দেহ শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রক্রিয়া চলছে।