বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় CBI-এর তৎপরতা, গ্রেফতার তিন রেল কর্মী। শুক্রবার (৭ জুলাই) ওড়িশার বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় তিন রেল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার অরুণ কুমার মহন্ত, সেকশন ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ আমির খান ও টেকনিশিয়ান পাপ্পু কুমারকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
তিন জনের বিরুদ্ধে আইপিসির ধারা 304 এবং 201 ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিআই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তিন রেলকর্মীই বালেশ্বরে কর্মরত ছিলেন। মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এটিই প্রথম গ্রেফতারি।
করমন্ডল এক্সপ্রেস ২ জুন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িতে ধাক্কা মারে। এতে ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি উলটে যায়। এর পরে উলটো দিক থেকে আসা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটে যায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা। এই ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯২ জন নিহত এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়।
ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল। পাশাপাশি গোটা মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করা হয় সিবিআই-এর হাতে। রেলের তরফে গঠন করা তদন্ত কমিটিতে দুর্ঘটনার মূল কারণ 'ভুল সিংন্যালিং' ব্যবস্থাকে দায়ি করা হয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সিগন্যাল আপ মেন লাইনের দিকে থাকলেও পয়েন্ট লুপ লাইনের দিকে ঘোরানো ছিল। ফলে ওই লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যার জেরে ঘটে যায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা।
রেলওয়ে বোর্ডের কাছে কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটি (CRS) জমা দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে যে সিগন্যালিং সিস্টেমে ঘাটতির কারণেই ঘটে গিয়েছে এত বড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার দিন পুরনো ব্যারিয়ার বদলে বৈদ্যুতিক বুম ব্যারিয়ার বসানোর কাজ চলছিল। কাজের জন্য বৈদ্যুতিন ইন্টারলকিং ব্যবস্থা ছিন্ন করা হয়। ট্রেন আসার আগে সেই সিগন্যালিং ব্যবস্থা পরীক্ষা না করেই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য সিগন্যাল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সিগন্যালিং সিস্টেম ছাড়াও, ট্রাফিক বিভাগকেও দুর্ঘটনার জন্য দায়ি করা হয়। এরপরই সিবিআইয়ের গ্রেফতারি রেল সুরক্ষার বে-আব্রু ব্যবস্থাকেই ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সম্প্রতি, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বাহানাগা বাজার এবং এর আশেপাশের গ্রামগুলির উন্নয়নের জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।