বালা-পাগড়ি পরা গেলে, হিজাব কী দোষ করল? বুধবার এই প্রশ্ন শুনে চমকে উঠল কর্নাটক হাইকোর্ট। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার দাবিতে আবেদনকারী মুসলিম ছাত্রীদের আইনজীবী কর্নাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল রবি ভার্মা কুমার বুধবার এই প্রশ্নই ছুড়ে দিলেন আদালতের কাছে।
আদালতের কাছে তাঁর অভিযোগ, বৈষম্য হচ্ছে। কারণ, পড়ুয়াদের জন্য কলেজগুলো কোনও নির্দিষ্ট পোশাক ঠিক করেনি। পাশাপাশি, হিজাব নিষিদ্ধ করার কোনও আইনও নেই। আবার, ভারতীয় সমাজে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বালা, পাগড়ির প্রচলন আছে। সেখানে বেছে বেছে কর্নাটক সরকার শুধু মুসলিম মেয়েদের হিজাবকে নিশানা করছে। শত্রুর মতোই তাঁদের সঙ্গে বৈষম্য করছে। তিনি জানান, এই ধরনের শত্রুতাকে সংবিধানের ১৫ নম্বর ধারায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রীতিমতো বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নাম উল্লেখ করে কুমার আদালতে বলেন, 'হিন্দু, শিখ আর খ্রিস্টানদের ধর্মীয় প্রতীক আছে। আমি উল্লেখ করতে চাই যে বহুত্ববাদ এবং বৈচিত্র্যই আমাদের সমাজের বৈশিষ্ট্য। শত্রুভাবাপন্ন বৈষম্যের জন্য কেবল হিজাবকেই কেন বেছে নেওয়া হল? এটা ধর্মের জন্য নয় কি?
আমরা কি শিখদের পাগড়ি পরা রুখতে পারি? মেয়েরাও চুড়ি পড়ে। তাহলে কেন গরিব মুসলিম মেয়েদের সঙ্গে বৈষম্য হচ্ছে?' রবি ভার্মা কুমার জানান, সংবিধানের ১৫ নম্বর ধারায় পরিষ্কার বলা আছে, ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ এবং জন্মস্থানের ভেদে কোনও বৈষম্য করা যাবে না। তারপরও কিন্তু, ধর্মের কারণে হিজাবের ব্যাপারে বৈষম্য হচ্ছে। কারণ, দোপাট্টা, চুড়ি, বালা, টিপ নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠছে না।
আরও পড়ুন- সমাজ বদলাতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন ৯৪ বছরের ‘অ্যানি বেসান্ত’
কর্নাটক হাইকোর্টের ফুল বেঞ্চকে রবি ভার্মা কুমার প্রশ্ন করেন, যদি পাগড়ি পরে সেনাবাহিনীতে চাকরি করা যায়, তবে কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরে প্রবেশ করা যাবে না? ধর্মীয় আচরণ পালন প্রত্যেকের অধিকারের মধ্যে পড়ে।
যখন সকলের জন্য শিক্ষা প্রয়োজন, যখন নারীশিক্ষার বিশেষ দরকার, তখন ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে না- দেওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষাক্ষেত্রে বড় আঘাত। এমনই অভিযোগ করেন রবি ভার্মা কুমার।
Read story in English