scorecardresearch

নির্দেশিকা ঘিরে বিভ্রান্তি, ২০০০-এর নোট বদলে ব্যাংক ভেদে নিয়ম বদল

ফুড অ্যাপ জোমাটো জানিয়েছে যে ৭২ শতাংশ ক্যাশ অন ডেলিভারি ২,০০০ টাকার নোটের মাধ্যমে হচ্ছে।

2000 money 2
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI) প্রচলন থেকে 2000 টাকার নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) গত সপ্তাহে (১৯ মে) ২,০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিল। নোটটি আপাতত চালু থাকলেও, ব্যাংক বলেছে যে বর্তমান নোটগুলো ২৩ মে থেকে ব্যাংকগুলোতে জমা বা বিনিময় করা যাবে। এটা করা যাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। একবারে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে জমা বা বিনিময় করা যাবে।

এর পাশাপাশি আরবিআই ১৯ মে এর বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকগুলোকে অবিলম্বে ২,০০০ টাকার নোট ইস্যু করা বন্ধের পরামর্শ দিয়েছে। ব্যাংক বলেছে যে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে ‘ক্লিন নোট পলিসি’ মেনে। এই ‘পরিষ্কার নোট নীতি’ বা ‘ক্লিন নোট পলিসি’-এর অধীনে জনসাধারণের ভালো মানের ব্যাংকনোট পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

আরবিআইয়ের মতে, ২,০০০ টাকার নোটের প্রায় ৮৯ শতাংশ ২০১৭ সালের মার্চের আগে ইস্যু করা হয়েছিল। আর তাদের আনুমানিক চার-পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে বাজারে চলছে, ‘এমন ব্যাংকনোটের পরিমাণ ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ ছিল সর্বোচ্চ ৬.৭৩ লক্ষ কোটি টাকা। আর, ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ সেটাই কমে হয়েছে ৩.৬২ লক্ষ কোটি টাকা।’

২,০০০ টাকার নোট কোথায় বদলানো বা জমা করা যাবে?

অ্যাকাউন্টে জমা করার এবং ২,০০০ টাকার নোট বিনিময়ের সুবিধা সমস্ত ব্যাংকে এবং আরবিআইয়ের ১৯ আঞ্চলিক অফিসে (আরও)-এ পাওয়া যাবে।

একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত ২,০০০ টাকার নোট জমা করা যেতে পারে, তার কোনও সীমা আছে?

রিজার্ভ ব্যাংকের মতে, আপনার গ্রাহককে জানুন (কেওয়াইসি) নিয়মাবলি এবং অন্যান্য প্রযোজ্য বিধি অথবা নির্দেশাবলি মেনে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২,০০০ টাকার নোট জমা করা যেতে পারে। একবারে ২০,০০০ টাকা মূল্যের ২,০০০ টাকার নোট বদল করা যেতে পারে।

আরবিআইয়ের আঞ্চলিক অফিসগুলো কোন শহরে আছে?

আরবিআইয়ের আঞ্চলিক অফিসগুলো আছে:- আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, বেলাপুর, ভোপাল, ভুবনেশ্বর, চণ্ডীগড়, চেন্নাই, গুয়াহাটি, হায়দ্রাবাদ, জয়পুর, জম্মু, কানপুর, কলকাতা, লখনউ, মুম্বই, নাগপুর, নতুন দিল্লি, পাটনা এবং তিরুবনন্তপুরমে।

নোট বদলাতে পরিচয়পত্র লাগবে?

এসবিআই ২১ মে জানিয়ে দিয়েছে, ২,০০০ টাকার নোট বদলাতে কোনও পরিচয়পত্র লাগবে না। নোট বদলানো যাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। ব্যাংকের গ্রাহকরা ছাড়াও অন্যান্য যে কেউ ২,০০০ টাকার নোট যে কোনও ব্যাংকের যে কোনও শাখা থেকে বদলাতে পারবেন। ২৩ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই নোট বদলানোর সুবিধা মিলবে।

২০০০ টাকার নোট বদলের জন্য মানুষজন ব্যাংকের পাশাপাশি পেট্রোল পাম্প, ই-কমার্স সাইট, সুপার মার্কেট এবং সোনা কেনার মত একাধিক পন্থা অবলম্বন করেছে। যদিও সারা দেশে ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে কোনও বিশৃঙ্খল দৃশ্য এখনও পর্যন্ত চোখে পড়েনি। যদিও গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, ব্যাঙ্কগুলি পরিচয় প্রমাণ এবং রিকুইজিশন ফর্মের ফিল-আপ করতে গ্রাহকদের বলছে। HDFC ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক সহ বেসরকারী ব্যাঙ্কগুলি গ্রাহকদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ফর্ম পূরণ করতে বলছে এবং নন-অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের কাছ থেকে পরিচয় প্রমাণ চেয়েছে বলেও গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন।

বেশিরভাগ প্রাইভেট ব্যাঙ্ক নন-অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের পরিচয়পত্রের প্রমাণ দিতে বলেছে। এসবিআই তার শাখাগুলিতে একটি অফিসিয়াল নোটে স্পষ্ট করেছে যে ২০০০ টাকার নোট বিনিময় বা জমা করার সময় কোনও ফর্ম বা স্লিপের প্রয়োজন হবে না।

এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক ইমেলে প্রশ্নের উত্তর না দিলেও, বেসরকারি ব্যাঙ্কের একজন সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, “আপনি যদি ব্যাংকের গ্রাহক হন, আমার কাছে আপনার কেওয়াইসি বিশদ থাকে তাতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু আপনি যদি আমার গ্রাহক না হন, তাহলে আপনাকে নোট বিনিময়ের জন্য পরিচয় প্রমাণ দিতে হবে কারণ আমাদের পরিসংখ্যান বজায় রাখতে হবে।”

অন্য ব্যাঙ্কের একজন সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, “নির্দেশিকা সম্পর্কে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও স্পষ্টতা নেই। আমরা গ্রাহকদের বিশদ সংগ্রহ করছি কারণ আমরা জানি না কখন নীতি পরিবর্তন হবে এবং আমাদের ডেটা জমা দিতে হবে।”

অন্যদিকে, এসবিআই, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক অফ বরোদা সহ পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলি গ্রাহকদের কোনও পরিচয় প্রমাণ বা ফর্ম পূরণ করতে বাধ্য করছে না। নোট বদলের জন্য মানুষজন ব্যাংক ছাড়াও ই-কমার্স, সুপার মার্কেট এবং পেট্রোল পাম্পে ভিড় জমাচ্ছেন। সারা দেশে বিভিন্ন দোকানে ২০০০ টাকার নোট নেওয়ার ওপর ‘না’ বলে নোটিশও দিয়েছে।

ফুড অ্যাপ জোমাটো জানিয়েছে যে ৭২ শতাংশ ক্যাশ অন ডেলিভারি ২,০০০ টাকার নোটের মাধ্যমে হচ্ছে। ই-কমার্স সাইটে এসি, ফ্রিজ, টিভি দামি মোবাইল কেনার জন্য অনলাইন লেনদেনের বদলে ক্যাশ অন ডেলিভারির চাহিদা বেড়েছে। পেমেন্ট অধিকাংশই করা হচ্ছে ২ হাজারের নোটে।

মুম্বই এবং অন্যান্য মেট্রোতে সোনার গহনার দোকানগুলিতে গত কয়েকদিনে ২,০০০ টাকার নোটে সোনার গহনা কেনার হিড়িক বেড়েছে। এমনকি যারা হোটেল রিসোর্টে অনলাইন লেনদেন করতেন তারাও এখন ২,০০০ নোটে লেনদেন করছেন। বিশেষ করে মানুষজনের মধ্যে এমন প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে পেট্রোল পাম্পে। গ্রাহকরা অধিকাংশ ২ হাজারের নোটে পেমেন্ট করাতে খুচরোর সমস্যায় ধুঁকছে পেট্রোল পাম্পগুলি।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest General news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Banks follow different rules people use various avenues to dump notes