রাজ্যব্যাপী করোনার চোখ রাঙানির মধ্যেও সুখবর। রবিবার রাজ্যে এসে পৌঁছল ১ লক্ষ কোভিশিল্ড। আগামিকালের মধ্যে ঢুকে যাবে আরও সাড়ে ৩ লক্ষ কোভিশিল্ড টিকা ঢুকবে রাজ্যে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এমনটাই খবর। রাজ্য সরকার টিকাকরণের জন্য কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড মিলিয়ে কয়েক লক্ষ টিকার বরাত দিয়েছিল। রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় টিকা। এর পর তা নিয়ে যাওয়া হয় বাগবাজারের সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরে।
এ ছাড়াও সোমবার বিকেল ৩টে ৪০ নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবে টিকা। মোট ১৪ লাখ কোভিশিল্ডের অর্ডার দিয়েছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘রাজ্যের হাতে যা টিকা আছে, তা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ করা হবে। কিন্তু আমাদের প্রাধান্য ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের টিকাকরণ। তাই ভ্যাকসিন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।‘
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, রাজ্যের হাত পর্যান্ত টিকা না থাকার কারণে থমকে গিয়েছে দ্বিতীয় ডোজে টিকাকরণ। ধীর গতিতে এগোচ্ছে ১৮ ঊর্ধ্বদের টিকাদান। প্রথম ডোজ নিলেও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য ডাকের অপেক্ষায় বহু মানুষ। শনিবার আবার কোভ্যাক্সিন না পেয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বিক্ষোভ হয়। তবে আজ রবিবার ও কাল সোমবার মিলিয়ে মোট সাড়ে ৪ লাখ টিকা এলে সমস্যা একটু কমবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘সাউথ-ইস্ট এশিয়া রিজিয়ন অফিস’-এর ‘কমিউনিকেবল ডিজিজ়েস’-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর রাজেশ ভাটিয়া জানাচ্ছেন, দেশে প্রতিষেধকের বর্তমান দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২৫ লক্ষ। কিন্তু চাহিদা তার চেয়ে অনেক বেশি। তাঁর কথায়, ‘‘যতক্ষণ না প্রতিষেধকের বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হবে অথবা দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি অন্য প্রতিষেধক বাজারে আসবে কিংবা প্রতিষেধক আমদানি করা হবে, ততক্ষণ এই ঘাটতি চলতেই থাকবে।’’
এদিকে, গত কয়েকদিনের তুলনায় কমল করোনায় মৃত্যু। সে সংখ্যা স্বস্তির না হলেও অস্বস্তিরও নয়। শনিবার রাজ্যে মৃত্যু হয়েছিল ১২৭ জনের। রবিবার সেই সংখ্যা কিছুটা কমে হয়েছে ১২৪। এদিকে করোনা সংক্রমণের নিরিখে এখনও বেলাগাম আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১৯ হাজার ৪৪১ জন।
এদের মধ্যে কলকাতায় আক্রান্ত ৪ হাজার ছুঁইছুঁই, মৃত্যু ২৮ জনের। উত্তর ২৪ পরগনাতেও সংক্রমিত প্রায় ৪ হাজার, মৃত ৩৪। শনিবার রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৩৬জন। রাজ্যে বর্তমানে সুস্থতার হার কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৮৬.০৭ শতাংশ।
করোনাকে হারিয়ে রাজ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা মুক্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৪৫৪ জন। বাংলায় মোট সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ৮ লক্ষ ৫৪ হাজার ৮০৫। বর্তমানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ২৬ হাজার ২৭।
এদিকে, নাইসেড অধিকর্তা শান্তা দত্ত জানিয়েছেন যে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে নেগেটিভ এলে করতে হবে আরটিপিসিআর। করোনা পরীক্ষায় আইসিএমআরের সংশোধিত নীতিতে নির্দেশে বলা হয়েছে যা নমুনা আসছে, তার ৩০-৪০ শতাংশ পজিটিভ আসছে তাই আরটিপিসিআর করাতে হবে।