Advertisment

"ত্রিপুরায় বাঙালিরাই আদি, জনজাতিরা বিদেশি"

নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের দাবি তাঁদের কাছে বিভিন্ন নথি ও রেকর্ড রয়েছে, যা থেকে বোঝা যাবে ত্রিপুরায় বাঙালিরা জনজাতিদের আগে থেকে বাস করছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tripura Bengalee

দাবি না মিটলে ভোট বয়কটের হুমকি (ছবি- দেবরাজ দেব)

 
Advertisment
ত্রিপুরার বাঙালিরা সেখানকার আদি বাসিন্দা। জনজাতিরা সেখানে বিদেশি। উত্তর ত্রিপুরায় শুক্রবার নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ নামের একটি সংগঠন এই দাবি করেছে। ১১ পয়েন্টের একটি দাবিপত্র দিয়েছে এই সংগঠন। মিজোরামের ব্রু-দের প্রত্যর্পণের দাবিও করা হয়েছে এই দাবিপত্রে। দাবি করা হয়েছে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের সময়ে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দাবি পূরণ না হলে ত্রিপুরায় তাঁরা ত্রিপুরার এডিসি ভোট বয়কট করবেন এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন। এই আন্দোলন ধাপে ধাপে চলবে বলে মঞ্চের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। শনিবার উত্তর ত্রিপুরার লালজুরি গ্রামে অবস্থান আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আন্দোলন শুরু হবে বলে জানান হয়েছে।
ক্যাব বিরোধী আন্দোলনের সময়ে নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ, উন্নয়ন মঞ্চ, বাঙালি ঐক্য মঞ্চ জাতীয় বেশ কয়েকটি সংগঠন ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় গত ৯-১১ ডিসেম্বর ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ কাঞ্চনপুর ও সন্নিহিত গ্রামগুলিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ২৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দেওয়ার পর ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়।
শুক্রবার সেই সময়সীমা শেষ হয়। এর পর নাগরিক মঞ্চের তরফ থেকে বলা হয় তাঁরা আর বসে না থেকে বিক্ষোভ ও আইনি আবেদনের রাস্তায় যাবেন।
নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের নেতা দীপ্তেন্দু নাথ বলেছেন, "বাঙালিরা ত্রিপুরার রাজার চাকলা রোশনাবাদের লোক, যে জায়গা বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত। ফলে আমরা বিদেশি বা বহিরাগত নই। রাজন্যশাসিত ত্রিপুরার সরকারি ভাষা ছিল বাংলা। রাজ সরকারে বাঙালিরা উচ্চ পদে চাকরি করত। আমরা মনে করি, বাঙালিরা এখানকার আদি বাসিন্দা। মঙ্গোলিয়া, চিন ও পৃথিবীর অন্য জায়গা থেকে আসা জনজাতিরা এখানে বিদেশি।"
ত্রিপুরা রাজমালার ভাষ্য অনুসারে এবং সেন্সাস রিপোর্ট অনুযায়ী রাজন্যশাসিত ত্রিপুরার মূল অধিবাসী ছিল বিভিন্ন জনজাতি সম্প্রদায়। অ জনজাতির কিছু স্বল্প সংখ্যক লোকজন এখানে বাস করতেন। রাজারা তাঁদের জমি দেওয়ার ফলে তাঁদের ক্ষমতাবৃদ্ধি ঘটে। ১৯৪৯ সালে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ত্রিপুরার মিলনের পরে পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তান থেকেও অনেকে চলে আসেন, ফলে অজনজাতিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
তবে নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের দাবি তাঁদের কাছে বিভিন্ন নথি ও রেকর্ড রয়েছে, যা থেকে বোঝা যাবে ত্রিপুরায় বাঙালিরা জনজাতিদের আগে থেকে বাস করছে। "আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা হাই কোর্ট ও প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার কথা ভাবছি। সেখানেই আমরা সব নথি দেব।"
এ সম্পর্কিত তথ্য সহযোগে একটি বই তাঁরা শীঘ্রই প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছেন।
মঞ্চের দাবি, সমস্ত সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে, মিজোরাম থেকে ব্রু গোষ্ঠী জনজাতিরা এখানে আসার পর। দাবি করা হয়েছে, এঁদের এখনই সে রাজ্যে ফেরত পাঠাতে হবে। এ ব্যাপারে ত্রিপুরা সরকারের বর্তমান নীতি সম্পূর্ণ উল্টো। রাজ্য ব্রু জনজাতিকে ত্রিপুরায় বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসনের নীতি নিয়েছে। মঞ্চের দাবি, ব্রু অভিবাসীরা ত্রিপুরায় এসে পৌঁছনোর পর থেকে চুরি ও সম্পত্তি ধ্বংস করে অনেককে ঘরহারা করে দিয়েছে।
মঞ্চের আরেক নেতা অনুপ নাথ বলেন, "ব্রু অভিবাসীরা আমাদের ৬০০০-এর বেশি মানুষকে ঘর ছাড়া করেছে। ওরা আসার আগে পর্যন্ত আমাদের এলাকায় জনজাতিদের সঙ্গে কোনও সমস্যা ছিল না। আমরা চাই এখনই ওরা চলে যাক।"
Photo: Debraj Deb
tripura
Advertisment