মঙ্গলবার আলিপুরে নব প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স হলে ভাঙড়ের আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও, বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিনহা এবং পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ । দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ভাঙড় সমস্যার সমাধান সূত্রের ইঙ্গিত মেলে এদিনের বৈঠক থেকে। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘন্টার বৈঠক শেষে জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, "সদর্থক আলোচনা হয়েছে, আশা রাখি খুব শীঘ্রই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জট কেটে যাবে।"
অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জমি কমিটির মুখপাত্র তথা নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তী বলেন, "আজ ভাঙড় আন্দোলনের একটা ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নিয়েছে, প্রশাসন নমনীয় হয়ে আমাদের দাবি মেনে নিয়ে তারা পাওয়ার গ্রিড থেকে সরে এসে পাওয়ার ট্রান্সমিশান সাব স্টেশন করার কথা বলেছে, এবং ১৬ টি লাইন এর পরিবর্তে মাত্র দুটি লাইন হবে বলে জানিয়েছে। অবশ্য আমরা এই দুটি লাইনের মধ্যে খামারআইট গ্রামের লাইনটির পরিবর্তে একই সঙ্গে মাছিভাঙা ও খামারআইট গ্রামের মাছ খান থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি। অবশ্য প্রশাসন এই প্রস্তাব মানতে চাইছে না। এর পরিবর্তে আমরা খামারআইট গ্রামের জন্য স্পেশাল প্যাকেজের আবেদন করেছি।"
অলীক চক্রবর্তী আরো বলেন, "আমরা যে আন্দোলন করছিলাম তা সঠিক তা আজকের এই বৈঠক থেকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, আমাদের আন্দোলনের জেরে প্রশাসন পাওয়ার গ্রিড করা থেকে সরে এসেছে এবং পাওয়ার গ্রিডের মধ্যে বিশাল বিশাল যে যন্ত্রাংশ আছে তা গ্রিড কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নেবে বলে জানিয়েছে।" যদিও এখনও ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের জট কাটেনি বলে জানিয়েছেন জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান। তিনি বলেন, "পাওয়ার গ্রিডের মধ্যে যাদের জমি আছে তাদের তো বটেই, এর পাশাপাশি যাদের জমিতে পাওয়া গ্রিডের তার সহ টাওয়ার বসেছে তাদের মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যাদের দোকান ভাঙচুর হয়েছে, আন্দোলন করতে গিয়ে শহিদ হয়েছেন এরকম মানুষদের আলাদা করে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। এই সব বিষয় নিয়ে আবারও আগামী শনিবার জেলা শাসকের সঙ্গে বৈঠক হবে।" অপরদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী শনিবার হয়তো ভাঙড় নিয়ে ভাঙড়ের গ্রামবাসীদের সঙ্গে শেষ বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে।