Advertisment

পড়শিদের ওপর চিনের ‘চোখ রাঙানি’র নিন্দা মার্কিন সামরিক রিপোর্টে, জয় দেখছে দিল্লি

‘ইন্দো-চিন সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং বেজিংয়ের আচরণ তাদের আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিফলন। এই আচরণের বিরোধিতায় আমারা ইউএস-র মিত্র এবং সহযোগীদের পাশেই।’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি।

  সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ওয়াশিংটনকে পাশে পেল দিল্লি।  লাদাখ পরিস্থিতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আমেরিকার (USA) সহযোগীদের বিরুদ্ধে বেজিংয়ের আগ্রাসনের বিষয়টি ঠাঁই পেল বিডেন সরকারের রিপোর্টে। এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে জো বিডেনের শপথের পরে ‘পড়শিদের উপর চিনের চোখরাঙানি’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল পেন্টাগন। এ বার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটের সামরিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটিতে শুক্রবার পেশ করা রিপোর্টে উল্লেখ, চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলায় আমেরিকা তার সহযোগী দেশগুলির পাশে দাঁড়াবে। সে দেশের প্রতিরক্ষা দফতরের আন্ডার সেক্রেটারি কলিন কাহল রিপোর্টটি পেশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পেন্টাগন বিষয়ক নীতি নির্ধারণের দায়িত্বেও রয়েছেন কাহল।

Advertisment

কলিন বলেন, ‘ইন্দো-চিন সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং বেজিংয়ের আচরণ তাদের আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিফলন। এই আচরণের বিরোধিতায় আমারা ইউএস-র মিত্র এবং সহযোগীদের পাশেই।’ পাশাপাশি, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রেক্ষিতে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC)-য় উত্তেজনা কমানোর সাম্প্রতিক উদ্যোগকে সমর্থন করেছেন তিনি। কলিন বলেন, ‘আমরা গভীর ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

ভারতকে ‘প্রধান সামরিক সহযোগী’ হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন কলিন। বলেছেন, ‘প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দিল্লির সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও নিবিড় করা হবে।’ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময়ের নীতিতে আরও গতি আনার কথাও জানান তিনি। কলিনের মন্তব্য, ‘চিনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্য ভারতকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিতে এই সিদ্ধান্ত।’’ তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে সেনেটের সামরিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাক রিড বলেন, ‘চিনের সঙ্গে কৌশলগত লড়াই চালাতে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল অবলম্বন করা উচিত আমেরিকার।’

প্রসঙ্গত, গত মাসে বিডেন দায়িত্ব নেওয়ার পরেই আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস লাদাখ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত বিতর্কের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রক্রিয়াকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু পড়শিদের ভয় দেখানোর চিনা কৌশল সম্পর্কে আমেরিকা উদ্বিগ্ন।’

এদিকে, পূর্ব লাদাখে সেনা সরানো নিয়ে চিনের সঙ্গে চুক্তির কথা সংসদে বলেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। বিরোধীরা তার পাল্টা কটাক্ষ করেছিল, নিজের এলাকা থেকে সেনা সরানো মানে চিনের কাছে আত্মসমর্পণ করার সমান। সেনা সরানো নিয়ে মিথ্যাচারেরও অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। সম্প্রতি ভারতীয় সেনার তরফে ভিডিও প্রকাশ করে প্রমাণ দেওয়া হল, সত্যিই প্যাংগং সো থেকে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে লালফৌজ। ধাপে ধাপে, সমন্বয় রেখে এবং পদ্ধতি মেনে পূর্ব লাদাখের ওই অঞ্চল থেকে সেনা সরাচ্ছে চিন।

প্যাংগং লেকের উত্তর ভাগে, কৈলাস রেঞ্জ এবং দক্ষিণ ভাগ থেকে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া চলছে। সেই ভিডিও প্রকাশ করেছে ভারতীয় সেনা। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চিনা সেনা অস্থায়ী বাঙ্কার, পাথর দিয়ে তৈরি শিবির জেসিবি এবং হাত দিয়ে সরিয়ে ফেলছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চিনা জওয়ানরা পাহাড়ি এলাকায় তাঁবু গুটিয়ে ফেলছে। তৃতীয় ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, বড় সংখ্যক চিনা সেনা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে আসছে। নিচে কিছু সেনা ট্রাক অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য। ট্রাকে চেপে তাঁরা চলে যাচ্ছেন। ধুলো উড়িয়ে সেনা জওয়ান বোঝাই ট্রাক বেরিয়ে যাচ্ছে।

ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, ডিসএনগেজমেন্ট বা সেনা সরানোর প্রক্রিয়া লাগাতার চলবে। প্রথমে সামরিক সম্ভার, ট্যাঙ্ক এবং বাহিনীর কমব্যাট ভেহিকল সরানো হচ্ছে। দুই পক্ষেরই পদাতিক বাহিনী ফরোয়ার্ড এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্যাংগং লেকের উত্তর ভাগে চিনা সেনা ফিঙ্গার ৫-এ অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করেছিল, সেটাও ভেঙে ফেলেছে তারা। হেলিপ্যাড মার্কিংও মুছে দেওয়া হয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং নিশ্চিত করেছিলেন, দুই পক্ষই সেনা সরানোর বিষয়ে চুক্তি করেছে। এই সেনা সরানোকে দিল্লির জয় দেখছে দিল্লি। ‘আগ্রাসী’ চিনকে চাপে রেখে ভারতের দাবি বেজিংয়ের কান পর্যন্ত পৌছনো গিয়েছে। তার ফলশ্রুতি এভাবে ডিসএনগেজমেন্টে জোর দেওয়া বলছেন প্রাক্তন সেনাকর্তারা।

LAC Joe Biden Indo-US Talks indo-china
Advertisment