দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুতে ফ্যাসিবাদের সমাপ্তি হল, এমন মন্তব্যই ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন বিহারের এক অধ্যাপক। আর এহেন মন্তব্যের জেরেই তাঁকে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন সঞ্জয় কুমার নামের ওই অধ্যাপক। ফেসবুকে বাজপেয়ীর সমালোচনা করাতেই তাঁর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ সঞ্জয় কুমারের। ২০-২৫ জনের একটি দল তাঁকে খুন করারও চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেছেন বিহারের মোতিহারির মহাত্মা গান্ধী সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ওই অধ্যাপক।
"আমায় যখন নিগ্রহ করা হয়ছিল, তখনকার কথা স্পষ্টভাবে পুরোটা মনে নেই। আমায় মারধর করা হয়েছিল। যতটা পেরেছিলাম প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিলাম। এটা মনে আছে যে ওরা আমায় প্রাণে মারতে চেয়েছিল। আমি কানহাইয়া কুমার হতে চাই কিনা সে নিয়েও ওরা মন্তব্য করছিল। আমায় দেশদ্রোহী বলেও সম্বোধন করে ওরা," সেদিনের হামলার বর্ণনা হাসপাতালের বেডে শুয়ে এভাবেই দিলেন সঞ্জয়। গত ১৭ অগাস্ট তাঁর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন জেএনইউ-এর ওই প্রাক্তনী। গত ২০ অগাস্ট থেকে দিল্লির এইমসের জরুরী বিভাবে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সঞ্জয়।
ওই অধ্যাপকের ফেসবুক পোস্টে মোতিহারিতে বিজেপির আইটি সেলের সদস্য রাজন শ্রীবাস্তব মন্তব্য করেন, "অধ্যাপক মশাই, আপনি এতদিন চম্পারনের বাসিন্দাদের ভালবাসার নমুনা দেখেছেন, এবার তাঁদের পেশি শক্তির নমুনা দেখার জন্য তৈরি থাকুন।" যেদিন তাঁর উপর হামলা চালানো হয়, সেদিন সকালে ফোনে তাঁকে তিন ব্যক্তি খুনের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেছেন সঞ্জয়। এই ফোনের পরই তাঁর বাড়ির সামনে একটা দল জড়ো হয় বলেও জানিয়েছেন ওই অধ্যাপক।
আরও পড়ুন,সরকারের সমালোচনা মানেই দেশদ্রোহিতা নয়: আইন কমিশন
বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে ওই অধ্যাপকের সাফ কথা, তাঁর নিজের মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। তিনি যে বাজপেয়ীকে শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন ওই পোস্টে সেকথাও বলেছেন। তবে তাঁর এই পোস্ট ঘিরে এত হইচই কেন হচ্ছে তা তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না বলেই মত সঞ্জয়ের।
অন্যদিকে রাজ্যের ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধেই সুর চড়িয়েছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদি। তিনি বলেন, ওই অধ্যাপক রং চড়িয়ে এসব আঘাতের কথা বলছেন। আসলে এসব করে ওই অধ্যাপক সহানুভূতি আদায় করতে চাইছেন বলেও মন্তব্য করেন সে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী।
গতবছর তাঁর দুই সহকর্মী এমন কথা বলায় তাঁদের ছাঁটাই করা হয় বলেও জানান সঞ্জয়। তাঁর উপর হামলা যে কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, গোটাটাই পরিকল্পিত, তাও বলেছেন ওই অধ্যাপক। এদিকে, সঞ্জয়ের উপর হামলার পর থেকেই ওই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্য।