শনিবার গভীর রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গুলি বিনিময়ের ফলে মৃত্যু হয়েছে এক বছর ১৬-এর কিশোরের। অন্য দু'জন গুরুতর আহত হয়েছে, পুলিশ জানিয়েছে, ৩১ শে মার্চ শহরে একটি রাম নবমীর শোভাযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষের পরে 'সাম্প্রদায়িক হিংসা' ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরেই এই মৃত্যু বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
রামনবমীর দিন সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নিয়ে রাজ্যপাল রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেকরের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রামনবমীর মিছিল ঘিরে দেশের বাংলার পাশাপাশি বিহারে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ছড়িয়েছে। তার প্রেক্ষিতেই উদ্বিগ্ন শাহ কথা বলেছেন বিহারের রাজ্যপালের সঙ্গে। খোঁজ নিয়েছেন বর্তমানে পরিস্থিতি ঠিক কীরকম আছে।
গোটা পরিস্থিতি জানার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ঠিক করেছে বিহার প্রশাসনকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সাহায্য করা হবে। একথা মাথায় রেখে বিহারে অতিরিক্ত আধাসামরিক বাহিনীও পাঠানো হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য ইচ্ছেমতো বাহিনী পাঠাচ্ছে না। বিহার সরকারই অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। তার প্রেক্ষিতেই বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘বিহারের রাজ্যপালের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রামনবমীর দিন সাম্প্রদায়িক হিংসার তীব্র নিন্দা করেছেন। একইসঙ্গে তিনি গোটা ঘটনায় উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। তার প্রেক্ষিতেই অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী বিহারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায় বিশ্বজুড়ে রামনবমী পালন করেছে। অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি বিহারেও পালিত হয়েছে রামনবমী। এই উৎসব পালনের সময় বিহারের সাসারাম ও বিহার শরিফ এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ায়। এই সাম্প্রদায়িক হানাহানির ঘটনায় বিহার পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। সাসারাম এবং বিহার শরিফ, উভয় জায়গাতেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে যানবাহন, বাড়িঘর এবং দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন।
সাসারামে ফের নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে। যার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অন্যদিকে পাটনায়, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন। এবং হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ ও প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে, দাঙ্গাকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।"নালন্দা জেলা শাসক শশাঙ্ক শুভঙ্কর বলেছেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা গুজবে কান না দেওয়ার জন্য জনগণের কাছে আবেদন করছি।”