প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্সকে সাহায্যের অভিযোগ আনল বিজেপি। পালটা, গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে 'মিথ্যার ওপর নির্ভর করে ছলনা'র আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন আনসারি। ঘটনার সূত্রপাত পাকিস্তানের সাংবাদিক নুসরত মির্জার দাবি ঘিরে।
প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি তাঁকে ২০০৫ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে পাঁচবার ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মির্জার দাবি, তিনি পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে দেখা করে সেই তথ্য শেয়ার করেছেন। পাক সাংবাদিকের এই দাবির পরই বুধবার বিজেপি টিভি আর সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল করে ফেলেছে আনসারির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে।
বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া দলের সদর দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'মির্জা বলেছেন যে তাঁর ভারত সফরের সময়, তিনি আনসারির সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং সংবেদনশীল ও গোপন তথ্য শেয়ার করেছেন। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে উপরাষ্ট্রপতির পদটি একটি সাংবিধানিক পদ। এমন অনেক বিষয় আছে, যা ভাগ করা যায় না। কারণ, সেগুলো দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত।'
বিজেপি মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেই সময় কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। তাই আনসারি এবং কংগ্রেসের দেশবাসীকে বলা উচিত, আদৌ সেরকম কিছু ঘটেছিল কি না। ভাটিয়া জানিয়েছেন, আনসারি একজনকে সন্ত্রাসবাদে মদত দেয় এমন দেশ থেকে পাঁচ বার আমন্ত্রণ করেছিলেন। আর, সন্ত্রাসবাদ রোখার ব্যাপারে তথ্য দিয়েছিলেন।
ভাটিয়া বলেন, 'ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর, কংগ্রেস সরকার এমন এক ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, যাকে দেশ এবং জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত তথ্য দেওয়া হয়েছিল।' ভাটিয়া বলেন, 'একবার নয়। এই তথ্য পাঁচ বার দেওয়া হয়েছিল। ভারতকে দুর্বল করতে এই সব তথ্য কাজে লাগিয়েছিল আইএসআই।'
বিজেপির এই প্রচারের জবাবে পালটা, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি বলেন, 'গতকাল এবং আজ মিথ্যার ছলনার আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। একশ্রেণির মিডিয়া এবং বিজেপি মুখপাত্র নিজে আক্রমণ করেছেন। অভিযোগ করা হয়েছে যে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে আমি পাকিস্তানের সাংবাদিক নুসরত মির্জাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। ইরানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নয়াদিল্লিতে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে এক সম্মেলনে আমার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল। বলা হয়েছে, এক সরকারি সংস্থার প্রাক্তন আধিকারিক জানিয়েছেন যে আমি দেশের স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলাম।'
আনসারি জানিয়েছেন, 'সরকারের পরামর্শেই বিদেশি প্রতিনিধিদের উপরাষ্ট্রপতি আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে। বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে সেই আমন্ত্রণ জানাতে হয়। আমি ২০১০ সালের ১১ ডিসেম্বর, ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অফ জুরিস্টস অন ইন্টারন্যাশনাল টেররিজম অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলাম। নিয়মমাফিক আমন্ত্রিতদের তালিকা উদ্যোক্তারাই ঠিক করে দিয়েছিলেন। আমি তাঁকে আমন্ত্রণও জানাইনি। তাঁর (নুসরত মির্জা) সঙ্গে দেখাও করিনি। আর, ইরানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমার দিনের যাবতীয় কাজকর্ম সরকারের নখদর্পণে থাকত।'
Read full story in English