Advertisment

নির্যাতিতার ভিডিও টুইট করে বেকায়দায় বিজেপির আইটি সেলের প্রধান

কেন একজন গণধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ওই টুইটককে 'দুর্ভাগ্যজনক ও বেআইনি' বলল জাতীয় মহিলা কমিশন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অমিত মালব্য।

হাথরাসের গণধর্ষিতার ৪৮ সেকেন্ডের ভিডিও টুইট করেছিলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। কিভাবে একজন গণধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হল তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবার শাসক দলের আইটি সেলের প্রধানের ওই টুইটককে 'দুর্ভাগ্যজনক ও বেআইনি' বলল জাতীয় মহিলা কমিশন।

Advertisment

কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা দ্য সানডে এক্সপ্রেসকে বলেন, 'যদি কেই ধর্ষণের শিকার হন, তবে তাঁর ভিডিও টুইট করা দুর্ভাগ্যজনক এবং সম্পূর্ণ বেআইনি।' উল্লেখ্য, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে, কেউ যৌন নিগ্রহের শিকার হলে বা সন্দেহভাজন হলে তাঁর পরিচয় প্রাকাশ্যে আনার বিষয়টি অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। এ জন্য অপরাধীর দু'বছর পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে।

উত্তরপ্রদেশ মহিলা কমিশনের চেযারপার্সন ভিমলা বাথম দ্য সানডে এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, তিনি ভিডিওটি দেখেননি। যদি সেখানে নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ করা হয় তবে তা 'অবশ্যই আপত্তিজনক'। বিষয়টি কমিশন দেখবে ও প্রয়োজনে অমিত মালব্যকে নোটিস পাঠানো হবে।

গত শুক্রবারই ৪৮ সেকেন্ডের ভিডিও টুইট করেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান। লেখেন, 'হাথরাসের নির্যাতিতা এএমইউ-এর সামনে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন তাঁর ঘাড়ের উপর উঠে শ্বাস রোধ করার চেষ্টা হয়েছিল। এতে অপরাধের গুরুত্ব কমেনি কিন্তু তাতে রং চড়ানোর চেষ্টা চলছে। একজনের বিরুদ্ধে অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা প্রয়োজন...'

ভিডিওটিতে দেখা যায়, নির্যাতিতা তরুণী মাটিতে শুয়ে রয়েছেন। তাঁর মুখ স্পষ্ট। শনিবার গভীর রাত পর্যন্তও ওই ভিডিওটি মালব্যের টুইটার অ্যাকাউন্টে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য মেসেজের কোনও জবাব দেননি।

শুক্রবার পরে আরও এক টুইটে মালব্য বলেছেন, 'যখন নির্যাতি এবং তার মা প্রাথমিক বয়ানে বিষয়টিকে একবারও ধর্ষণ বলেলনি, এমনকী একটি রিপোর্টেও তার উল্লেখ নেই। তখন হাথররাসের ঘটনাকে কেন অনেকে যৌন নিগ্রহের রং দিতে চাইছেন? শারীরিক নিগ্রহেই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে, গুরুত্বের বিচারে এটা কি কম কিছু?'

মালব্য তাঁর টুইটটি বিজেপির মহিলা মোর্চার সোশাল মিডিয়ার প্রধান প্রীতি গান্ধীর সঙ্গে শেয়ার করেন। সেখানেই তাঁর প্রশ্ন, 'নির্যাতিতার ভিডিও পোস্ট করলে কোন আইন লঙ্ঘিত হয় তার ব্যাখ্যা দিতে পারেন? কোনও রিপোর্টেই বল হয়নি যে সে যৌন নিগ্রহের শিকার। এ সবই লুটিয়ান সংবাদ মাধ্যমের ভাবনা। আমরা কী আইনের শাসন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, নাকি কতিপয়ের ভাবনা দ্বারা চালিত?!!'

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ফরেন্সিক রিপোর্টে জানিয়েছিল, মহিলাকে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে, তাঁর জ্ঞান ফিরে আসার পরে গত ২২ সেপ্টেম্বর ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বয়ান রেকর্ডের সময় ১৯ বছর বয়সী নির্যাতিতা অবশ্য বলেছিলেন যে, ১৪ সেপ্টেম্বর হামলার সময় তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল।

জাতীয় মলিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেছেন, 'আদালত একাধিকবার জানিয়েছে যে কেউ ধর্ষণের শিকার হলে তাঁর পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। আমরাও এ বিযটিতে অত্যন্ত সজাগ। পুলিশ দাবি করেছে নির্য়াতিতা ধর্ষিতা নন। তবে এ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। আমি এ বিষয়টি নিয়ে নিজে অমিত মালব্য ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে কথা বলব। যদি জানা যায় যে নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল তবে জাতীয় মহিলা কমিশন বিষয়টি নিয়ে এগোবে ও যুক্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করবে।'

উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি হৃতেশ চন্দ্র আওস্থি বলেছেন তিনি ভিডিওটি দেখেননি, তাই কোনও মন্তব্য করবেন না। অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অশ্বীনি কুমারও এবিষয়ে মন্তব্যে নারাজ। হাথরাস থানাতেও মালব্যের টুইটের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জমা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

rape bjp
Advertisment