Aryan Khan Case: আরিয়ান কাণ্ডের জল এবার মহারাষ্ট্রের যুযুধান দুই রাজনৈতিক শিবিরের দুয়ারে। দীপাবলির আগেই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস বলেছিলেন, উৎসব মিটলেই খেলা শেষ করবেন তিনি। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিকের সঙ্গে মাফিয়া জগতের যোগ প্রকাশ্যে আনবেন। সেই ঘোষণা মতোই মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রবীণ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুললেন ফড়নবিস।
তিনি বলেছেন, ‘বম্বে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের অন্যতম চক্রী সর্দার শাবাব আলি খান এবং দাউড ঘনিষ্ঠ সেলিম প্যাটেলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে মালিকের।‘ এখানেই থামেননি মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা। তাঁর অভিযোগ, ‘শাবাব আলি এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বোঝাপড়া রয়েছে এনসিপি নেতার। এমনকি কুরলার এলবিএস মার্গের একটা অভিজাত সম্পত্তি সেলিম প্যাটেলের থেকে কিনেছেন মালিক। এই সেলিম প্যাটেল হাসিন পার্কার অর্থাৎ দাউদের বোনের নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। কেন অত কম দামে সেলিম পার্কারের মতো ব্যক্তির থেকে কিনলেন নবাব মালিক?’
ফড়নবিস বলেন, ‘তাঁর কাছে থাকা অভিযোগ সংক্রান্ত সব নথি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের হাতে তুলে দেওয়া হবে। প্রতিলিপি পাঠানো হবে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারকে।‘ এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সম্প্রতি সস্ত্রীক ফড়নবিসের বিরুদ্ধে মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন নবাব মালিক। সেই অভিযোগের পাল্টা দিতে এদিন মহারাষ্ট্রের এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অপরাধ জগতের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগ আনলেন বিরোধী দলনেতা। কালীপুজোর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘দীপাবলি শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর নবাব মালিকের বিরুদ্ধে আমি বোমা ফাটাবো। তথ্য-প্রমান দিয়ে দেখাবো মালিকের সঙ্গে অন্ধকার জগতের যোগ। উনি সলতেটে আগুন দিয়েছে।’
তার আরও মন্তব্য ছিল, ‘কু-মতলবেআমার এবং স্ত্রীয়ের নাম মাদক কান্ডে জড়িয়েছেন মালিক। এই অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। অযথা অভিযুক্ত একজনের সঙ্গে আমাদের জড়ানো হয়েছে। উনি খেলা শুরু করেছে। আমি সেই খেলা শেষ করব। শুধু দীপাবলি শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করব।’
এদিকে, গত মাস থেকেই মুম্বইয়ের প্রমোদতরী মাদক কাণ্ডে একের পর এক তোপ দেগে চলেছেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। এনসিপি নেতার নিশানায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর আঞ্চলিক অধিকর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে। ওয়াংখেড়েই যাত্রী সেজে ২ অক্টোবর কর্ডেলিয়া প্রমোদতরীতে হানা দিয়ে পাকড়াও করেন শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান খান-সহ বেশ কয়েকজনকে। সম্প্রতি জামিন হয়েছে আরিয়ানের। কিন্তু ওয়াংখেড়েকে তোপ দাগতে ছাড়ছেন না মালিক।
মন্ত্রীর সাম্প্রতিক আক্রমণ, গোটা মাদক কাণ্ড বিজেপির ষড়যন্ত্র। ওয়াংখেড়েকে বোড়ে বানিয়ে বিজেপিই চক্রান্ত করে মাদক কাণ্ডে আরিয়ানদের ফাঁসিয়েছে বলে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী। মহারাষ্ট্র এবং এই রাজ্যের মানুষ ও বলিউডের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করতেই বিজেপি চক্রান্ত করে এসব করেছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেছিলেন, “আমি বারবার বলছি, মহারাষ্ট্র এবং এই রাজ্যের মানুষকে ছোট করতেই ওয়াংখেড়ের মাধ্যমে পুরো চক্রান্ত করেছে বিজেপি।”
এনসিবি কর্তার প্রতি তাঁর কটাক্ষ ছিল, এটা কোনও ধর্মযুদ্ধ নয়। আমি শুধু জানতে চাই, একটা জঘন্য জাতি শংসাপত্র নিয়ে সমীর ওয়াংখেড়ে কীভাবে সরকারি চাকরি পেলেন?’ প্রথম থেকেই তাঁর দাবি, ‘সমীর ওয়াংখেড়ে জন্মসূত্রে মুসলিম। সরকারি চাকরি পেতে জঘন্য জাতি সার্টিফিকেট জমা করেছেন।‘
এখানেই শেষ নয়, এই এনসিপি নেতার মন্তব্য, ‘২০১৫ থেকে মুসলিম হয়েও ওয়াংখেড়ে পরিবার নিজের পরিচয় বদল করা শুরু করেছে। ততদিনে কয়েকজন বলিউডে তারকার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে প্রচারের আলোয় চলে এসেছেন সমীর ওয়াংখেড়ে। নিজেদের সামাজিক মাধ্যমে দাউদ ওয়াংখেড়ে অর্থাৎ সমীরের বাবা হয়েছেন ডিওয়াই ওয়াংখেড়ে। সেখান থেকে ধ্যানদেব ওয়াংখেড়ে। ইয়াসমিন ওয়াংখেড়ে অর্থাৎ সমীরের বোন হয়েছেন জেসমিন, এক মুসলিম যুবককে বিয়ে করে পরে বিচ্ছেদও হয়েছে। সেই যুবক এখন ইউরোপে থাকেন।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন