ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার জেরে স্থগিত করা হল কেন্দ্রীয় সরকারের ৯ বছর পূর্তিরসকল অনুষ্ঠান। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি ততই ভয়াবহ হয়েছে। গভীর রাতে ট্রেনের দরজা ভেঙে ও গ্যাস কাটারের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হয়। কিন্তু তাতেও দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটির মধ্যে থেকে সকলকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলেই অনুমান। ফলে উদ্ধারে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গেই হাত মিলিয়েছে সেনাবাহিনী।
এদিকে শনিবার সকালেই দুর্ঘটনা স্থলে পৌঁছেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, “মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রেল, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং রাজ্য সরকার উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই রেলের তরফে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে” তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনা নিয়ে কোন রাজনীতি নয়, উদ্ধারই আমাদের অগ্রাধিকার’
শনিবার ভোর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৩৩ জন। আহত কমপক্ষে ৯০০ জন। ওড়িশার মুখ্যসচিব পিকে জেনা এই তথ্য দিয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। তবে রেল ভোর পর্যন্ত ৮৮ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। শুক্রবার রাতেই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এই দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিনই বালেশ্বরের দুর্ঘটাস্থলে পৌঁছেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব । তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, “মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রেল, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং রাজ্য সরকার উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই রেলের তরফে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে” ।
তিনি আরও বলেন, “কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল সে বিষয়ে এখনই মন্তব্য করা সঠিক নয়। রেলের তরফে কোন গাফিলতি ছিল কিনা তা এখনই বলা যাবে না। আপাতত আহতদের উদ্ধার ও তারা যাতে সঠিক চিকিৎসাটুকু পায় তার দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনা নিয়ে কোন ধরণের রাজনীতি করা উচিত নয়। মানুষের আবেগ আমাদের অগ্রাধিকার,”।
ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেম্দ্র মোদী, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করেছেন। বাংলা থেকে সহায়তার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘোষণা করেন যে, ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রত্যেক মৃতের আত্মীয়কে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব টুইটারে জানিয়েছেন যে, মৃতদের পরিবার ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা এবং অপেক্ষাকৃত কম আঘাতপ্রাপ্তরা ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন।
এদিকে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে বাতিল করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল অনুষ্ঠান। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এক ট্যুইট বার্তায় এই তথ্য দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার জেরে কেন্দ্রীয় সরকারের ৯ বছর পূর্তি উদযাপন সহ সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে’। পাশাপাশি তিনি দুর্ঘটনাইয় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।