ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে শালিমার-হাওড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস। চারিদিকে হাহাকার, মৃতুমিছিল। যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের উল্টে যাওয়া কোচে এখনও অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং সেনা আধিকারিকরা মৃতদেহগুলিকে উদ্ধার করার জন্য লড়াই জারি রেখেছেন।
রেল সূত্রে খবর, প্রথমে ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসের ২ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়, ঘুটঘুটে আন্ধকারের মধ্যে লাইনচ্যুত হওয়া কামরাগুলিতে এসে করমণ্ডল ধাক্কা মারার পরই ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সামনের দিক ট্রেনের থেকে মোট ১৫ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। মুখ্য সচিব প্রদীপ জেনা বলেছেন, "প্রায় ৯০০ জন আহত যাত্রীকে বালাসোর, ময়ূরভঞ্জ, ভদ্রক, জাজপুর এবং কটক জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে”।
তিনি আরো বলেন, "শনাক্ত করা মৃতদেহগুলিকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কাজ চলছে। অজ্ঞাতপরিচয় নিহতদের জন্য জন্য বিধিবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।" শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ কলকাতা থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ভুবনেশ্বরের ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে বালাসোর জেলার বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছেই ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
উদ্ধার অভিযানের জন্য প্রায় ২০০টি অ্যাম্বুলেন্স এবং ৪৫টি মোবাইল হেলথ টিম মোতায়েন করা হয়েছে। তা ছাড়া আরও প্রায় ৫০ জন চিকিৎসককে মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব আজ সকালে বালাসোরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিরঞ্জন পূজারি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।"
এদিকে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল ও বিলম্বিত হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের খড়গপুর ডিভিশনের হাওড়া-চেন্নাই মেইন লাইনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কারণে এখনও পর্যন্ত ১৮টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
ভয়ঙ্কর সেই মুহুর্তের কথা স্মরণ করে এক রেলযাত্রী সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “সবে সন্ধ্যের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ প্রবল ঝাঁকুনি, চারিদিকে অন্ধকার, হাহাকার, চিৎকার স্বজন হারার যন্ত্রণা, সেই এক ভয়াবহ দৃশ্য, বেঁচে আছি এটাই বিশ্বাস হচ্ছে না”।