‘Bois Locker Room’ (বয়েজ লকার রুম) নামক তথাকথিত গোপন ইন্সটাগ্রাম গ্রুপে তারই এক ইন্সটাগ্রাম অনুগামীর আপত্তিকর ছবি শেয়ার করার অভিযোগে দিল্লিতে সোমবার পুলিশের হাতে আটক হয় দিল্লির এক ১৫ বছরের স্কুলছাত্র। তারই বয়ানের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দক্ষিণ দিল্লির কিছু অভিজাত স্কুলের দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঁচজন পড়ুয়াকে তাদের বাবা-মায়ের উপস্থিতিতে প্রায় ছ'ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করল দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখা।
ওই গ্রুপের আরও ২১ জন সদস্যকে আগামী দিনে তদন্তে যোগদান করে সহযোগিতা করার নোটিশ পাঠিয়েছে পুলিশ।
ইন্সটাগ্রাম গ্রুপটির কথা জানতে পেরে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে এফআইআর দায়ের করে সাইবার অপরাধ শাখা। অভিযোগ, এই গ্রুপে দক্ষিণ দিল্লির নামী স্কুলের ছাত্ররা মেয়েদের ছবি আদানপ্রদান করত, এবং চলত যৌনতা নিয়ে স্পষ্টতই হিংসামূলক আলোচনা।
পুলিশের এক সূত্রের কথায়, "আটক হওয়া ১৫ বছরের ছেলেটির কথার ভিত্তিতে গ্রুপের আরও পাঁচজন সদস্যকে চিহ্নিত করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় সাইবার ক্রাইম শাখা। তারা ইতিমধ্যেই তাদের মেসেজ এবং অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সকলেই পুলিশকে জানায়... তাদেরকে স্কুলের, বা পাড়ার, বা কোচিং ক্লাসের কোনও বন্ধু তাদেরকে গ্রুপে অ্যাড করেছে।" ওই পড়ুয়াদের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।
ওই গ্রুপের অ্যাডমিনদের খোঁজ করছে পুলিশ, এবং তাদের আটক করার আগে আইনি পরামর্শও নিচ্ছে বলে খবর।
যে ১৫ বছরের কিশোর আটক হয়েছে, তাকে লকডাউনের কারণে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে এখনও হাজির করা যায় নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে বাবা-মায়ের কাছেই থাকতে দেওয়া হয়েছে, এবং তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন যে সে শহর ছেড়ে যাবে না।
পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিকের বক্তব্য, আটক হওয়া কিশোর পুলিশ এবং কাউন্সেলরদের জানিয়েছে যে সে গ্রুপ অ্যাডমিন ছিল না। মার্চ মাসের শেষে তাকে এই গ্রুপে অ্যাড করে তারই এক সহপাঠী। আরেক আধিকারিক বলেন, "কিছুদিন পর তারা গ্রুপে মোট ৫১ জনকে অ্যাড করে, এবং আরও একটি গ্রুপ খোলে। মেয়েদের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ছবি নিয়ে নিজেদের গ্রুপে শেয়ার করে। কেউ কেউ 'মর্ফ', অর্থাৎ বিকৃত করা ছবিও শেয়ার করে বলে অভিযোগ।"
দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত পিআরও অনিল মিত্তল বলেন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ওপর নিয়মমাফিক নজরদারি চালাতে গিয়েই ওই গ্রুপের চ্যাটের স্ক্রিনশট দেখতে পায় পুলিশ, যার পর এফআইআর দায়ের করা হয়। "ইন্সটাগ্রামকে বলা হয়েছে ওই গ্রুপের সঙ্গে আপাতদৃষ্টিতে জড়িত সমস্ত অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য জমা করতে। এখনও সেই তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা," বলেন তিনি।
মিত্তল আরও বলেন যে এখন পর্যন্ত ১০ জন সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রাপ্তবয়স্ক। "যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ মাইনর, তাদের বিরুদ্ধে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট-এর বিধি মেনেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে... সংগৃহীত প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে," বলেন মিত্তল। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ দিল্লির চারটি, এবং নয়ডার একটি বেসরকারি স্কুলের ছাত্রদের নাম এই গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন