আইসিআইসিআই-ভিডিওকন ঋণ খেলাপি মামলায় বেণুগোপাল ধূতকে জামিন দিল বম্বে হাইকোর্ট। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক থেকে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে এই শিল্পপতির বিরুদ্ধে। আইসিআইসিআই প্রতারণা মামলায় আগেই ওই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও চন্দা কোচারকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। ২৬ ডিসেম্বর সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন গ্রেফতার করে বেণুগোপাল ধূতকে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জালে চন্দার স্বামী দীপক কোচারও।। এই মামলায় ইতিমধ্যেই ICICI ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দা কোচার এবং তাঁর স্বামী দীপক কোচারকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ২০১৮ সালের মার্চেই প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক তৎকালীন এমডি চন্দা কোচার নেতৃত্বে ভিডিয়োকনের কর্ণধার ভেনুগোপাল ধুতকে হাজার কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন। যার বদলে ভিডিওকনের থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণ নিয়েছিলেন কোচাররা। জানা যায়, চন্দার স্বামী দীপক কোচার এবং দুই আত্মীয় ৩,২৫০ হাজার কোটি টাকা পাওয়ার প্রায় ছয় মাস পরে একটি সংস্থা তৈরি করেছিলেন।
আরও পড়ুন: < শ্লীলতাহানির শিকার খোদ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন, গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী >
২০১৯ সালে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ককে ১,৭৩০ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে সিবিআই কোচার দম্পতি এবং ভিডিয়োকন গ্রুপের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল। এফআইআর-এ, সিবিআই সুপ্রিম এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড, ভিডিয়োকন ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (ভিআইইএল) এবং অজানা সরকারি কর্মচারীদের অভিযুক্ত হিসাবে নাম দিয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে যে ‘অভিযুক্ত চন্দা কোচার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ককে প্রতারণা করার জন্য ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে বেসরকারি ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ঋণ মঞ্জুর করেছিলেন। যা অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র।’ ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
সিবিআই জানিয়েছে যে ঋণের ৪০ হাজার কোটি টাকা ভিডিয়োকন গ্রুপ এসবিআয়ের নেতৃত্বে ২০টি ব্যাঙ্কের একটি কনসোর্টিয়াম থেকে সুরক্ষিত করেছিল। ৩,২৫০ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে ২,৮১০ কোটি টাকা প্রায় ৮৬ শতাংশ অপ্রয়োজনীয় রয়ে গেছে। ভিডিওকন অ্যাকাউন্টটিকে ২০১৭ সালে একটি নন-পারফর্মিং অ্যাসেট হিসাবে ঘোষণা করেছিল।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ, ২০০৮-এর সেপ্টেম্বরে এই ঋণ দিতে চন্দা কোচার তার পদের অপব্যবহার করেছেন এবং পরের দিনই, তার স্বামীর সংস্থা Nupower Renewables ভিডিওকন গ্রুপের থেকে ৬৪ কোটি টাকা পেয়েছিল। অভিযোগ, ৩২৫০ কোটি টাকার ঋণের অনুমোদন হওয়ার কয়েকদিন পরই দীপক কোচরের নিউ পাওয়ার রিনিউয়েবলে বিনিয়োগ করেন বেণুগোপাল।
এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন প্রধান চন্দার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। আইসিআইসিআই কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, সংস্থার আচরণবিধি, স্বার্থরক্ষার নীতি ভঙ্গ করেছেন চন্দা। এরপর চন্দাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক থেকে। কয়েকদিন আগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর আগে মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট, একটি কম্পানির সম্পত্তি সহ মোট ছন্দার মোট ৭৮ কোটির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। ইডি-র অভিযোগ, দীপক কোচরের সংস্থা নিউপাওয়ার রিনিউয়েবলস প্রাইভেট লিমিটেডে মোট ৬৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে ভিডিয়োকন গ্রুপ, যা মূলত ঘুষ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল।