scorecardresearch

জুনেইদ-নাসিরকে পুড়িয়ে খুনে অভিযুক্ত তিন গোরক্ষক হরিয়ানা পুলিশের চর, বিস্ফোরক তথ্যে তোলপাড়

রিঙ্কু সাইনি, লোকেশ সিংলা এবং শ্রীকান্ত নামে তিন ইনফর্মারের নামে অন্তত চারটি এফআইআর দায়ের হয়েছে গত দুমাসে।

Booked for murder by Rajasthan Police, three accused worked as Haryana Police informers
জুনেইদ এবং নাসিরকে এই বোলেরো গাড়িতেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়।

রাজস্থানের দুই বাসিন্দা জুনেইদ আর নাসিরের গোমাংস পাচারের অভিযোগে হরিয়ানার ভিওয়ানিতে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় গোটা দেশ স্তম্ভিত। গোরক্ষকদের তাণ্ডবে এমন নারকীয় ঘটনায় গায়ে কাঁটা দেয়। তদন্তে নেমে রাজস্থান পুলিশ বেশ কয়েকজনের নামে এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন হল হরিয়ানা পুলিশের খোঁচড় বা ইনফর্মার। তাঁরা পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন অভিযানেও যেত বলে খবর।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তথ্য ঘেঁটে জানতে পেরেছে, রিঙ্কু সাইনি, লোকেশ সিংলা এবং শ্রীকান্ত নামে তিন ইনফর্মারের নামে অন্তত চারটি এফআইআর দায়ের হয়েছে গত দুমাসে। ফিরোজপুর ঝিরকা এবং নাগিনা থানায় অভিযোগ দায়ের রয়েছে। পাঁচজন মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জুনেইদ এবং নাসিরের খুনের অভিযোগ উঠেছে। এঁরা প্রত্যেকেই গোরক্ষক দলের সদস্য। এই তালিকায় আরেকজনের নাম রয়েছে, সে হল মনু মানেসর। বজরং দলের সদস্য এবং হরিয়ানা সরকারের গোরক্ষক টাস্ক ফোর্সের সদস্য। সোমবার রাজস্থান পুলিশ জানিয়েছে, আরও ৮ জনের খোঁজ চলছে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানা পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছিল। ফিরোজপুর ঝিরকা থানায় রাত ১০.৩০ নাগাদ পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। মানে নাসির এবং জুনেইদের অপহরণের কয়েক ঘণ্টা আগে। তা-ও আবার হরিয়ানার গোহত্যা বিরোধী আইনে। সেই এফআইআরে লেখা ছিল, একটি পুলিশ টিম নুহ জেলার আগোন গ্রামে মোতায়েন রয়েছে। গুপ্তচর এবং গোরক্ষক দলের রিঙ্কু জানিয়েছে, পাঁচজন গোমাংস পাচারের কাজে যুক্ত, তাঁরা রাজস্থান থেকে একটি পিক-আপ ভ্যানে আসছে। তাঁদের ধরা যেতে পারে।

এরপর এফআইআর অনুযায়ী, ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে রিঙ্কুর সঙ্কেত পেয়ে পিক-ভ্যানটিকে আটকানো হয়। পুলিশ দেখে গাড়িটি পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ট্রাফিকের কারণে সম্ভব হয়নি। চালক এবং বাকি চারজন গাড়ির জানলা থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। সেই পাঁচজনকে শনাক্ত করেছিল রিঙ্কুুই।

আরও পড়ুন জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় কাঠগড়ায় পুলিশ, ধৃতের বয়ান ঘিরে তুঙ্গে চর্চা

জুনেইদ এবং নাসিরের খুনের পর এই ফিরোজপুর ঝিরকা থানা কাঠগড়ায় উঠেছে। রিঙ্কু রাজস্থান পুলিশকে জানিয়েছে, গোরক্ষক ওই দুজনকে তুলে নিয়ে যায় থানায় গোমাংস পাচারের সন্দেহে। হরিয়ানা পুলিশ সেই অভিযোগের তদন্ত করছিল।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি, ফিরোজপুর ঝিরকা থানায় আরও একটি এফআইআর দায়ের হয়। তাতে এসআই বলবীর সিং রিঙ্কুকে মুখবীর খাস অর্থাৎ খোঁচড় এবং গোরক্ষক দলের সদস্য হিসাবে বর্ণনা করেন। খেরা গ্রামের কাছে রিঙ্কুর টিপ পেয়ে অভিযান চালিয়ে পাঁচজন গরু পাচারকারীকে ধরতে যায়। একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গত ২০২১ সালে হরিয়ানা সরকার গোরক্ষক টাস্ক ফোর্স তৈরি করে। তাতে সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে গোরক্ষক দলের সদস্যরা রয়েছেন। কিন্তু রাজস্থানের দুই মুসলিম যুবকের মৃত্যুর পর গোরক্ষক দল কাঠগড়ায় উঠেছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রথম প্রকাশিত হয়, মনু মানেসর ওরফে মোহিত যাদবের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহ আগেই খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু পুলিশ সেটাকে এফআইআর হিসাবে দায়ের করেনি। কারণ হিসাবে দেখানো হয়, আক্রান্ত আঘাতের চোটে মারা যায়।

ফিরোজপুর ঝিরকার ডিএসপি সতীশ কুমার বলেছেন, রিঙ্কু, লোকেশ এবং শ্রীকান্ত সন্দেহজনক গরু পাচারের খবর দিয়ে থাকে। গোরক্ষক দলের সদস্য ওঁরা। কিন্তু পুলিশকে খবর দেওয়াই তাঁদের কাজ। কখনও কখনও পুলিশের সঙ্গে তাঁরা যায় সাক্ষী হিসাবে।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest General news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Booked for murder by rajasthan police three accused worked as haryana police informers