টেরিজা মে'র পদত্যাগের পর ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন বরিস জনসন। মঙ্গলবার ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির অভ্যন্তরীণ ভোটে জনসন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জেরেমি হান্টকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ২০১৬ সালের ব্রেক্সিট ভোটের প্রধান কাণ্ডারি জনসন পেয়েছেন ৯২,১৫৩ জন কনজারভেটিভ পার্টি সদস্যের ভোট, যেখানে হান্ট পেয়েছেন ৪৬,৬৫৬ জন সদস্যের সমর্থন। জনসনের কাঁধে আপাতত গুরুদায়িত্ব, আজ থেকে তিন মাসের মধ্যে ব্রেক্সিটের সফল বাস্তবায়ন, যার জন্য তিনি অতীতে "ডু অর ডাই" শপথ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর আনুষ্ঠানিক শপথগ্রহণ হবে বুধবার দুপুরে।
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরেই জনসন তাঁর প্রথম বিবৃতিতে বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি "ব্রেক্সিটের রূপায়ণ করে দেশকে ঐক্যবদ্ধ" করবেন, এবং বিরোধী লেবার পার্টিকে পরাজিত করবেন।
আরও পড়ুন: ব্রেক্সিট ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরে দাঁড়ালেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে
আপাতত নিজের দলের সমর্থন পেয়ে এই জয় ৫৫ বছর বয়সী জনসনের পক্ষে যথেষ্ট কৃতিত্বের। তাঁর রাজনৈতিক জীবনে জনসন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পদ এবং নির্বাসনের টানাপোড়েনে থেকেছেন বরাবর। তাঁর আজকের জয়ের তাৎপর্য মূলত দুটি: এক, এর ফলে ব্রিটেন এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, উভয়কেই সম্ভাব্য ব্রেক্সিট সংক্রান্ত সংঘাতের পথে ঠেলে দেওয়া হলো; দুই, দেশে সাংবিধানিক সঙ্কটের আশঙ্কাও ঘনীভূত হলো, যেহেতু ব্রিটেনের সাংসদরা প্রতিজ্ঞা করেছেন, যথাযথ 'ডিভোর্স ডিল' ছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছেড়ে বেরোনোর চেষ্টা যে সরকারই করুক, তার পতন ঘটাবেন তাঁরা।
সব মিলিয়ে ব্রিটেনের ইতিহাসে এমন টালমাটাল সময় সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর আসে নি। এই প্রেক্ষিতে জনসনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অর্থ হলো, ২০১৬ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছেড়ে বেরোনোর ব্রিটিশ সিদ্ধান্তের পর এই প্রথম কোনও কট্টর ব্রেক্সিট সমর্থক সে দেশের শাসনভার হাতে তুলে নিলেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, নয়া প্রধানমন্ত্রী এবার বেশ কিছু সময় ব্যয় করবেন নিজের সরকার এবং ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলি পূরণ করতে। তাঁর ঘনিষ্ঠ টিমে থাকার কথা বেশ কিছু ব্রেক্সিট সমর্থকের, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত দুই সাংসদ, প্রীতি প্যাটেল এবং ঋষি সুনক।