ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করলেন বরিস জনসন। তবে, ইস্তফা দিলেও নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না-হওয়া পর্যন্ত তিনি কাজ চালিয়ে যাবেন। একইসঙ্গে মেয়াদ শেষ করতে না-পারায় তিনি আক্ষেপও প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে জনসন ভাষণ দেন। সেখানেই নিজের পদত্যাগের কথা জানান। একইসঙ্গে জনসন তাঁর বক্তব্যে দাবি করেন, ব্রিটেনের উন্নতির স্বার্থে তিনি যে কাজ করেছেন, তার জন্য গর্বিত।
তিনি একথা বললেও বরিসের জন্য তাঁর দল কনজারভেটিভ পার্টির সরকার গভীর সংকটে পড়েছিল। শেষপর্যন্ত দেশের স্বার্থে জনসনকে পদত্যাগ করতে অনুরোধ করেন তাঁরই সহযোগীদের অন্যতম ট্রেজারি প্রধান নাদিম জাহাউই। বরিস অবশ্য তার আগে মনেপ্রাণেই পদে থাকতে চেয়েছিলেন। এমনকী, জানিয়েছিলেন যে দেশবাসী তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। সেই কারণে তিনি পদত্যাগ করতে নারাজ।
যদিও পার্লামেন্টকে তিনি জানিয়েছিলেন, যদি দেখেন যে সরকারকে আর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না, তবে পদত্যাগ করবেন। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ট্রেজারি প্রধান ঋষি সুনাক এবং স্বাস্থ্যসচিব সাজিদ জাভিদ পদত্যাগ করেন। এর ফলে ব্রিটেনের শাসকদল কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে জনসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আরও ছড়ায়।
তাঁর মতামত এবং নৈতিকতা নিয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই অসন্তোষ চরমে উঠেছে। সুনাক-সহ কমপক্ষে ৩২ জন ব্রিটিশ জনপ্রতিনিধি ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বরিস জনসনের সরকার থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ওপর আর তাঁদের আস্থা নেই। কারণ, জনসনই তাঁর সরকারকে গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছেন।
করোনা অতিমারীরর সময় পার্টি গেট দুর্নীতি থেকে নানা বিতর্কে জর্জরিত হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এরপর ২০২০-র জুনেই কনজারভেটিভ পার্টির ৫৪ জন সাংসদ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনাস্থা এনেছিলেন। তবে সেই অনাস্থা ভোটে জিতে যান বরিস জনসন। এভাবেই সেই যাত্রায় কুর্সি বাঁচান তিনি।
তবে গত ২৪ ঘণ্টায় জনসনের মন্ত্রিসভা থেকে ৪ জন মন্ত্রীর পদত্যাগ তাঁকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। তারপরও ইস্তফা না-দেওয়ার ব্যাপারে অনড় ছিলেন বরিস। কিন্তু, ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ওপর। শেষ পর্যন্ত বিকল্প না-দেখে অনড় অবস্থান থেকে সরলেন। প্রধামন্ত্রী পদ ছাড়তে রাজি হলেন তিনি।
Read full story in English