আতঙ্কে জেরবার বউবাজারবাসী। ঘরছাড়া বহু। প্রমাদ গুনছেন তার কয়েকগুন। তার মধ্যেই দুর্গা পিতুরি লেন থেকে দেড়শ মিটার দূরে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল নজরে পড়েছে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। এই অবস্থায় শুক্রবার কলকাতা পুরভবনে কেএমআরসিএল, মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ছিলেন চৌরঙ্গির বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে।
বৈঠকে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের রোষে পড়তে হয়েছে কেএমআরসিএলের কর্তাদের। পৌনে তিন বছর আগে ওই অঞ্চলেই মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় বিপর্যয় ঘটেছিল। তখনও বহু বাসিন্দাদের বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতির দায়িত্ব নিয়েছিল কেএমআরসিএল। দৃশ্যতা তা হয়েওছে। অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু, রেহাই মিলল না। সেইসব মেরামতির জায়গায় সমেত ফের ফাটল লক্ষ্য করা যায়। প্রশ্নের মুখে কেএমআরসিএলের কাজের মান। কেন এমন হল? তিন বছর হতে গেলেও কেন ভালো করে সারাইয়ের কাজ হল না? তা নিয়েই কেএমআরসিএন কর্তাদের প্রশ্ন করেন মেয়র। এসবের জন্য তাদের দোষ কবুল করারও কথা বলেছেন ফিরহাদ হাকিম।
মেট্রোর কাজের জন্য বউবাজরের ওই অংশের ভূগর্ভস্থ নিকাশী ব্যবস্থাও খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ মেয়রের।
বৈঠক শেষে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, 'ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় যাদের রুটিরুজি ব্যাহত তাদের জীবিকার বিষয়টি দেখবে কেএমআরসিএল। মাটি পরীক্ষার কাজ চলবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ওই অঞ্চলের সার্ভে হবে। সার্ভে করছে পুরসভাও।' তাঁর কথায়, মেট্রোর কাজের জন্য এখনও ২৩টা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। আরও ৮-৯টা বাড়ি বসবাসের জন্য উপযুক্ত নয়।
ওই এলাকার নীচ দিয়ে দিয়ে মেট্রোর চলাচল আদৌ কী নিরাপদ? প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এদিকে কেএমআরসিএল বিধি মেনে কাজ না করলে মেট্রোর নির্মাণকাজের ছাড়পত্র কী কেড়ে নিতে পারে কলকাতা পুরসভা? 'জবাবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন যে, 'মানুষের সুবিধার জন্যই এই কাজ হচ্ছে। অনেকে উপকৃত হবেন। কলকাতার যান চলাচলে সুবিধা হবে। অনুমতি কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি পুরসভার নয়, নবান্নের বিষয়। তবে কলকাতা পুরসভা ও সরকার সবসময় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকেছে ও থাকবে। পুরসভা দেখছে, ওই এলাকার বাড়িগুলি কী অবস্থায় রয়েছে। সেগুলি ভাঙতে হবে, নাকি মেরামতি করলেই হবে।'