অনলাইন গেমই ডাকল চরম সর্বনাশ। গেমে আসক্ত ছেলে। তাই দেখে ছেলেকে সামলাতে মা গেম খেলতে দেননি। তাতে শুধরে যাওয়ার বদলে মাকেই খুন করে দিল ছেলে। শুধু খুনই না। খুনের ঘটনার কথা জানাজানি হওয়া আটকাতে দু'দিন দেহ লুকিয়ে রাখল গুণধর ছেলে।
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বছর ১৬-র ওই অভিযুক্ত রবিবার ভোর তিনটে নাগাদ তার মাকে খুন করে। তারপর, মায়ের নিথর দেহ লুকিয়ে রাখে বাড়িরই একটা ঘরে। আর, সেটা দেখে ফেলে তার ছোট বোন। একথা যাতে জানাজানি না-হয়, সেজন্য বোনকেও শাসিয়েছিল হত্যাকারী।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেটির বাবা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। তাঁর পোস্টিং বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে। নিহত গৃহবধূ ছেলে-মেয়েকে নিয়ে থাকতেন লখনওয়ের বাড়িতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার মা ও ছেলের মধ্যে বচসা হয়। ব্যাগে টাকার পরিমাণ কম দেখে ছেলের ওপর সন্দেহ হয় মায়ের।
প্রথমে ওই মহিলা ছেলেকেই চোর বলে সন্দেহ করে বকাঝকা দেন। পরে, অবশ্য খুঁজে না-পাওয়া টাকা বাড়িতেই পাওয়া যায়। এনিয়ে অশান্তি বাড়ে। ছেলেটি অভিযোগ করে, বিনাদোষে মা তাকে বদনাম করেছে। এমনিতেই সে অনলাইন গেম খেলতে না-দেওয়ায় মায়ের ওপর অসন্তুষ্ট ছিল। গভীর রাতে তার বাবার পিস্তল যেখানে থাকত, সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি বের করে মাকে গুলি করে অভিযুক্ত।
এরপর দেহটি বাড়ির একটি ঘরে সরিয়ে সর্বত্র রুম ফ্রেশনার দিয়ে দেয়। যাতে গন্ধ ছড়াতে না-পারে। তার বোন ঘটনাটি দেখে ফেলায়, বোনকে বাড়িতে আটকে রাখে ওই কিশোর। ঘটনার কথা কাউকে বললে বোনকেও খুন করা হবে বলে সে হুমকি দেয়। তারপর থেকে দু'দিন ধরে অর্ডার দিয়ে বাইরে থেকেই খাবার আনাচ্ছিল হত্যাকারী। ঘরবন্দি বোনের হাতে বাইরে থেকেই পৌঁছে দিচ্ছিল খাবার।
আরও পড়ুন- নুপুর শর্মাদের পাশে নরসিংহানন্দ, জুম্মাবারে জামা মসজিদে যাওয়ার হুমকি, গন্ডগোলের আশঙ্কায় প্রশাসন
এভাবে বাইরে থেকে খাবার আসা, আর ওই বধূকে দেখতে না-পেয়ে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা দু'দিন আগে ওই বাড়ি থেকে গুলির শব্দও পেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশীরাই পুলিশকে খবর দেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পুলিশকেও প্রথমে ভুলপথে চালনা করতে চেয়েছিল অভিযুক্ত।
সে প্রথমে অভিযোগ করে, এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি তাদের বাড়িতে কাজ করতে এসে এই খুন করেছে। কিন্তু, ফরেনসিক তদন্তের সঙ্গে ছেলেটির বক্তব্য না-মেলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে অভিযুক্ত। শেষ পর্যন্ত সে অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয় বলেই জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
Read full story in English