আবাস কেলেঙ্কারি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। বেশিরভাগক্ষেত্রেই নিশানায় শাসক দলের জনপ্রতিনিধি ও নেতারা। কিন্তু সেই দুর্নীতি মারাত্মক রূপ পেয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের বয়রা গ্রামপঞ্চায়েতে। তৃণমূলের প্রধানের কথায় আবাস যোজনার ঘর দেওয়ার জন্য টাকা নিয়েছে তারই দলের পঞ্চায়েত সদস্য। সংবাদ মাধ্যমে মুখ খোলায় লাগাতার হুমকির অভিযোগ প্রধানের অনুগামীদের বিরুদ্ধ। প্রবল টানাপোড়েনে তৈরি হয় মানসিক চাপ। রেহাই পেতে শেষ পর্যন্ত কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযুক্ত প্রধানের নাম অসিত মণ্ডল। তবে নিজের বিরুদ্ধে উঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন অসিত।
জানা গিয়েছে, বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের মালিদহ গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য দিলীপ দাস। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর দেওয়ার নাম করে ওই গ্রামেরই প্রায় জনা পঞ্চাশের থেকে ১০ হাজারা, ১৫ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। আর এই সবটাই করেছেন তিনি প্রধান অসিত মণ্ডলের কথায়। আদায়ের টাকা নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য দিলীপ পঞ্চায়েত প্রাধান অসিতকে দিয়েছেন বলে সর্বসমক্ষে স্বীকার করেন।
গিলীপ দাসের অভিযোগ, তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে আসাসের ঘরের জন্য গ্রামবাসীদের কাছে থেকে টাকা তুললেও কেউ ঘর পায়নি। ফলে গ্রামবাসীরা এখন টাকা ফেরতের দাবি করেছে। কিন্তু টাকা দিচ্ছেন না প্রধান। পরবর্তীতে বিষয়টি তিনি দলেও নেতৃত্বকে জানান এবং সংবাদমাধ্যের সামনে ও খোলসা করেন। আর এরপরই বিপত্তি বাড়ে। পঞ্চায়েত সদস্য দিলীপকে বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অসিত মণ্ডলের লোকজন নানা হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। ভয়ে দিলীপ দাসরা বাড়ি থেকে বেড়তেও সাহস পাননি।
পঞ্চায়ের সদস্য দিলীপ দাসের র স্ত্রী মঞ্জু দাসরে দাবি, "নান হুমকির ফলে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল পরিবার। আর সেই মানসিক চাপে চলতি মাসের ৬ তারিখ, শুক্রবার বিকেলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী।" দুই দিন বনগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন দিলীপবাবু। সোমবার দিলীপ দাসের স্ত্রী মঞ্জু দাস, অভিযুক্তদের শাস্তি ও নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
যদিও দিলীপ দাসের অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন প্রধান অসিত মণ্ডল। তার দাবি, "সাংসারিক কারণে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল দিলীপ। আমার সঙ্গে দিলিপের কোন যোগাযোগ নেই। গ্রামের একাধিক লোকের কাছ থেকে টাকা তুলেছে দিলীপ। নানা দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত আছে পঞ্চায়েত সদস্য।" আবাস যোজনার টাকা তুলে প্রধানকে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "আমি কোন টাকা নেইনি। পুরোপুরি মিথ্যা অভিযোগ।"