লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বলেছেন, ব্রাহ্মণরা জন্মসূত্রেই উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন, যার মূলে রয়েছে তাঁদের ত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, এবং অন্যান্য সম্প্রদায়কে পথ দেখানোর ক্ষমতা।
রাজস্থানের কোটা শহরে অখিল ব্রাহ্মণ মহাসভার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রবিবার এই মন্তব্য করেন লোকসভার স্পিকার। তাঁর কথায়, "ব্রাহ্মণ সমাজ বরাবরই বৃহত্তর সমাজকে পথ দেখানোর কাজ করে এসেছে। আজকের যুগেও কোনো গ্রামে বা জনপদে একটিও যদি ব্রাহ্মণ পরিবার বাস করে, তবে সেই পরিবার নিজেদের সেবা এবং আত্মোৎসর্গের কারণে সবসময়ই উচ্চস্থান অধিকার করে থাকেন। যার ফলে এই সমাজে জন্মসূত্রেই উচ্চতর সম্মান পেয়ে থাকেন আপনারা।"
ব্রাহ্মণ সমাজের প্রতি তাঁর সমাদরসূচক মনোভাব বোঝাতে টুইটার এবং ফেসবুকের সাহায্যও নেন বিড়লা।
টুইটারে তাঁর পোস্টের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ব্যবহারকারীদের একাংশ, যাঁদের অনেকের মতেই লোকসভা অধ্যক্ষের সম্মানীয় আসনের কথা মনে রাখা উচিত ছিল বিড়লার।
পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ-এর রাজস্থান শাখার সভাপতি কবিতা শ্রীবাস্তবও বিড়লার মন্তব্যের সমালোচনা করে দাবি করেছেন যে তিনি তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করুন। শ্রীবাস্তবের বক্তব্য, "কোনো একটি সম্প্রদায়ের প্রাধান্য প্রমাণ করতে চাওয়া বা একটি সম্প্রদায়কে অন্য সব সম্প্রদায়ের উর্ধে রাখা, সংবিধানের ১৪ ধারার বিরোধী। এতে করে অন্যান্য সম্প্রদায়কে ছোট করা হয়, এবং জাতিবাদকে সমর্থন করা হয়।" শ্রীবাস্তব আরও জানিয়েছেন যে তাঁদের সংগঠন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে বিড়লার নামে লিখিত অভিযোগ পাঠাবে।
রবিবারের সমাবেশে লোকসভা অধ্যক্ষ তথা কোটার সাংসদ এও বলেন, "এদেশে এখনো আপনারা দেখবেন, অধিকাংশ শিক্ষকই ব্রাহ্মণ পরিবারের।"
সমাবেশের পোশাকি নাম ছিল 'যুবক যুবতী পরিচয় সম্মেলন', যার উদ্দেশ্য ছিল বিবাহের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্রাহ্মণ পরিবারের মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া। বিড়লা বলেন, এই ধরনের পরিচয় সম্মেলনই সমাজকে বাঁচানোর একমাত্র উপায়।
"যদি সমাজকে একসঙ্গে বেঁধে রাখতে চান, তবে আজ একটাই ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন আমাদের পূর্বপুরুষেরা একে অপরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতেন, তেমন আজ আমাদের আছে পরিচয় সম্মেলন। সমাজকে বাঁচানোর এই একটাই উপায়," বলেন তিনি। এই ধরনের বিবাহের বিপরীত উদাহরণ হিসেবে বিড়লা তুলে ধরেন ওয়েবসাইট এবং "ঘটকের" মাধ্যমে বিবাহ, এবং যোগ করেন যে আগেকার দিনের বিয়ে ভাঙত না।