হাতের মুঠোয় চাঁদ। ২৩ অগাস্ট ঠিক সন্ধ্যা ৬.০৪ মিনিটে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যাণ্ডার বিক্রম চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে ভারত। এই কৃতিত্ব বিশ্বের সামনে নিঃসন্দেহেই মাথা উঁচু করেছে ভারতের। এদিকে একদিকে যখন দেশ সেলিব্রেশনের মেজাজে রয়েছে তখন ইসরো বিজ্ঞানীরা সাফল্যের পিছনে পরিশ্রমের কথা স্মরণ করেছেন। নাওয়া-খাওয়া ভুলে চন্দ্রযান ৩ এর সফল অবতরণের লক্ষ্যে কীভাবে প্রাণপাত করেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা তা জানলে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যাবে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রধান এস সোমনাথের মুখে ফিরে এল ২০১৯ সালের ব্যর্থতার স্মৃতি। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, ‘‘এক বছর তো এটা বুঝতেই কেটে গিয়েছিল, ভুল কোথায় ছিল!’’ সেই সঙ্গে তিনি স্মরণ করেন, শূন্য থেকে কীভাবে আজ এই সাফল্য অর্জন হয়েছে। ব্যর্থতা থেকে পথ খুঁজেই আজ সাফল্য পেয়েছে ইসরো। ইসরো প্রধান আরও বলেন, " চন্দ্রযান-২ -এর ব্যর্থতা চাঁদের নরম-ভূমিতে যাওয়ার প্রচেষ্টার শিক্ষা সত্যিই আমাদের পদ্ধতিটিকে নিখুঁত করে তুলতে সাহায্য করেছে। অবতরণ প্রক্রিয়ায় প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা রয়েছে"।
অ্যাসিট্যান্ট প্রোজেক্ট ডিরেক্টর কে কল্পনা মিশনের কার্যক্রম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করার জন্য বিশেষ করে সমালোচনামূলক অপারেশনের জন্য পর্যালোচনা কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, চন্দ্রযান-২-এর ব্যর্থতা চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্যের ভীত নির্মাণ করতে সাহায্য করেছিল। এই মিশনে গত চার বছর ধরে একটানা কাজ করে চলেছে আমাদের বিজ্ঞানীরা'। তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে আমরা যা অর্জন করতে চেয়েছিলাম আজ আমরা তা অর্জন করেছি। চার বছর দেরি হলেও আমরা তা করে দেখিয়েছি'। ISRO-এর টেলিমেট্রি ট্র্যাকিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের ডিরেক্টর বি এন রামকৃষ্ণের মতে, গত চার বছর ছিল "চন্দ্রযান-২-এর ব্যর্থতার সমস্ত কারণ নিয়ে আলোচনা এবং তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা, এবং সব কিছুর ওপর নিরন্তর পরীক্ষা চালানো"।
ইতিহাস গড়ল দেশ, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ চন্দ্রযান ৩-এর। ২৩ অগাস্ট সকাল থেকে ছিল টানটান উত্তেজনা। অবশেষে অগ্নিপরীক্ষায় সফল ইসরো। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ করল চন্দ্রযান ৩। দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ইসরোর বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আশা ছিল সফল অবতরণের । সেই মোতাবেক সব কিছু প্ল্যান করেই এগিয়েছে প্রথম থেকেই। ইসরো নিজেও চন্দ্রযান ৩ এর সফল অবতরণ নিয়ে আশাবাদী ছিল।
ইসরো প্রধান এইমিশন সম্পর্কে বলেন, ‘চার বছর কম সময়ে আমরা আমাদের মিশন উন্নত করতে এবং একটি ব্যাকআপ পরিকল্পনা তৈরিতে আমাদের বিজ্ঞানীরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন। এই মিশনে এখন পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছুই ঠিক ঠাক হয়েছে। আমরা বিভিন্ন স্তরে সিস্টেম যাচাই করে অবতরণের প্রস্তুতি নিয়েছি এবং পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘চন্দ্রযান-২ মিশনের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগের সকল ভুল সংশোধন করেছে ISRO’।