মাঝেরহাট ব্রিজ বিপর্যয়ের পর কেটে গেছে ৪ দিন। এখনও শহরের ওই এলাকায় যান যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না শহরবাসী। রাস্তায় বেরিয়ে হিমশিম অবস্থা নিত্যযাত্রীদের। নিজের গন্তব্যে পৌঁছতে আগে যে সময় লাগত, এখন সেই গন্তব্যে যেতে ঘড়ির কাঁটা ঘুরে যাচ্ছে। এদিকে ঘুরপথে গাড়ি যাওয়ায়, অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকছেন অটোচালকরা। বিকল্প রাস্তার দশাও বেহাল। সব মিলিয়ে শিরে সংক্রান্তি ওই এলাকার। মুশকিল আসান করতে চেষ্টার কসুর করছে না কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। যাত্রী পরিবহণ যথাসম্ভব স্বচ্ছন্দ্য করতে আজ কিছু বিধিনিষেধ জারি করল তারা।
শুক্রবার কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফে ওই এলাকায় যান চলাচলের কিছু নয়া রুট ঠিক করে দেওয়া হল। কী সেই রুটগুলি?
আরও পড়ুন, ব্রিজ বিপর্যয়ের জেরে এবার পুজোয় বাড়তি যান যন্ত্রণা?
১. বেহালা থেকে যেসব গাড়ি রাস্তায় নামবে, তাদের জন্য থাকছে তারাতলা রোড-হাইড রোড-রিমাউন্ট রোড ও তারপর ডি এইচ রোড অথবা সিজিআর রোড-হেস্টিংস-স্ট্র্যান্ড রোড। আবার বেহালা থেকে কেউ গাড়ি নিয়ে ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট বা ডালহৌসির দিকে এলে, তাঁকে খিদিরপুর রোড দিয়ে আসতে হবে।
২. দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, বজবজ থেকে আসা গাড়িগুলোকে তারাতলা রোড দিয়ে আসতে হবে। তারপর নেচার পার্ক ধরে গার্ডেন রিচ উড়ালপুলে উঠতে হবে। মোমিনপুর যাওয়ার ক্ষেত্রে গাড়িগুলোকে রিমাউন্ট রোড ধরতে হবে।
৩. ঠাকুরপুকুর, জোকা এলাকা থেকে টালিগঞ্জ, রাসবিহারী, গড়িয়াহাট, এসপ্ল্যানেড, পার্ক স্ট্রিট, ডালহৌসি যেতে হলে জেমস লং সরণি বা এমজি রোড ধরতে হবে।
৪. দক্ষিণগামী গাড়ির জন্য আলিপুর পার্ক রোড-চেতলা সেন্ট্রাল রোড-রাজা সন্তোষ রোড ক্রসিং একমুখী করা হয়েছে।
৫. আলিপুর রোডে রাজা সন্তোষ রোডের ক্রসিং থেকে উত্তরগামী গাড়িগুলো যাবে। এরপর তারা যাবে আলিপুর পার্ক রোড-বর্ধমান রোড-ডিএইচ রোড দিয়ে। অথবা ওই গাড়িগুলোর অভিমুখ হাজরা বা ন্যাশনাল লাইব্রেরি বা এক্সাইড হলে, সেক্ষেত্রে রুট নতুন রাস্তা-জাজেস কোর্ট রোড।
৬. টাঁকশাল থেকে নিউ আলিপুর ট্র্যাঙ্গুলার পার্ক যাওয়ার জন্য পূর্বগামী গাড়িগুলো যাবে এনআর অ্যাভিনিউ দিয়ে। অন্যদিকে, পশ্চিমগামী গাড়িগুলোর জন্য থাকছে শাহপুর রোড।
বিকল্প পথ বেহাল এবং কোথাও বা সরু হওয়ার জেরে দীর্ঘক্ষণ বাসে-অটোয় থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাসবিহারী, গড়িয়াহাট, পার্ক স্ট্রিট, ধর্মতলা হয়ে ডালহৌসি যাওয়ার জন্য অধিকাংশ গাড়িই এনআর অ্যাভিনিউ-দুর্গাপুর ব্রিজ-টালিগঞ্জ ব্রিজ দিয়ে যাচ্ছে। এজন্যই অতিরিক্ত সময় লাগছে বলে জানানো হয়েছে ট্রাফিক পুলিশের তরফে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অতিরিক্ত নগরপাল (১) বিনিত গোয়েল বলেন, সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে এই সমস্যা মেটানো যায়। এজন্য সাধারণ মানুষের সহযোগিতার কথাও বলেছেন তিনি। অন্যদিকে, ঘুরপথে যান চলাচল করায় অনেক ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত ভাড়া চাইছেন অটোচালকরা। এ প্রসঙ্গে শ্রী গোয়েল জানান, যেসব এলাকায় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে কোনও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।