১৯৩১-এর ২৩ মার্চ ব্রিটিশরা ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল তাঁকে। আর ২০১৯-এ দাঁড়িয়ে ভগত সিং-এর আদর্শকে ফাঁসি কাঠে লটকে দিচ্ছে দেশের মানুষ, এমনটাই মনে করছেন ভগত সিং-এর ভাইপো অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শেওনান সিং।
৮৮ তম শহিদ দিবসে ভগত সিং-এর ছোট ভাই রণবীর সিং-এর সন্তান বক্তব্য রাখছিলেন। সেখানেই তিনি এমনটা বলেন।
শেওনান সিং বললেন, "ভগত সিং চাইতেন ওঁর আদর্শ সম্পর্কে মানুষ জানুক, পড়ুক। একজন মানুষও যদি নিজের মতামত গড়ে তুলতে পারতেন, তিনি খুশি হতেন। স্বতন্ত্র চিন্তা তৈরি হোক মানুষের মধ্যে, চাইতেন তিনি"। শহিদ দিবসের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভগত সিং-এর আরেক ভাইপো অভয় সান্ধুও। তাঁর ভাষণেও ক্ষোভের সুর, "আমার ওই মানুষটার আদর্শ নিয়ে আদৌ ভাবিত নই। ভগত সিং এমন এক সমাজের স্বপ্ন দেখতেন, যেখানে ধনী দরিদ্রের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকবে না। অথচ স্বাধীনতার ৭১ বছর পর সেই ব্যবধান কমা তো দুরের কথা, ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ওনার লড়াইটা কিন্তু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ছিল না। ১৮৬০ সালে তৈরি হওয়া ভারতীয় দণ্ডবিধির মতো ব্যবস্থা, যা যুগ যুগ ধরে পরিবর্তিত হয়নি, তার বিরুদ্ধে লড়াই ছিল। আজকের তরুণ প্রজন্ম সেই সব ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে এগিয়ে আসুক"।
আরও পড়ুন, বিজেপিতে যোগ দিয়ে বাংলায় পালাবদল চান প্রাক্তন সিপিএম নেতা
উদাহরণ স্বরূপ অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সিং বললেন, "ভারতের মত দেশে পুঁজিবাদীরাই দেশকে নিয়ন্ত্রণ করে। কমিউনিজমে পুঁজিবাদকে নিয়ন্ত্রণ করে রাষ্ট্র। আমি বলছি না, আমাদের কমিউনিস্ট হতে হবে। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, পুঁজিবাদের কাছে গণতন্ত্র আমাদের স্বার্থটাই বিকিয়ে দিচ্ছে। কোনও ব্যবস্থাকেই অন্ধভাবে মেনে নেওয়া উচিত না আমাদের। আমাদের ভেবে দেখতে হবে গণতন্ত্র আজ কোথায় দাঁড়িয়ে। ধর্ম আজকে রাজনীতিকে চালিত করছে"।
"দেশপ্রেম এবং বিপ্লব মানুষের অলংকার নয়। আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে কোনও ব্যবস্থায় জায়গা করে দেওয়ার জন্য যে পরিবর্তন আনতে হয়, তা-ই বিপ্লব। দাড়ি রাখার জন্য কাউকে জর করা, কিম্বা মন্দির, মসজিদ তৈরি করার জন্য বল প্রয়গ করার নাম বিপ্লব না"। বললেন শেওনলাল। ১৯২০ সালে ভগত সিং লিখেছিলেন, বিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আমরা ধর্ম, জাত পাত, গায়ের রঙ নিয়ে কথা বলছি, এটাই যথেষ্ট লজ্জার। ১০০ বছর পার করে দেখছি এই পরিস্থিতি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক এখন। আমরা এই আলোচনায় আরও বেশি প্রশ্রয় দিচ্ছি এখন। এটা খুবই দুঃখজনক, ভগত সিং-এর মৃত্যুর একশ বছর পর সমাজের ছবিটা আরও মারাত্মক।
Read the full story in English