নিজের দলীয় নেতৃত্বের চাপের মুখেই নতিস্বীকার করলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। আজ ঘোষণা করে দিলেন, আগামি ৭ জুন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান হিসেবে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। এরই সঙ্গে অবসান ঘটল তাঁর তিন বছরকালের বিতর্কিত প্রধানমন্ত্রিত্বের। ডাউনিং স্ট্রিটে তাঁর সরকারি বাসভবনে এক আবেগপূর্ণ বিবৃতি দিয়ে মে বলেন, ব্রিটেনের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হওয়া তাঁর "জীবনের অন্যতম সম্মান"। "দেশসেবার" যে সুযোগ তিনি পেয়েছেন, তার কথা বলতে গিয়ে গলার স্বর বুজে আসে তাঁর।
জুলাই ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হন মে, এবং তাঁর মেয়াদের প্রায় পুরোটাই কেটেছে ব্রেক্সিট গণভোটের সাহায্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে বেরোনোর অসফল প্রয়াসে। ব্রেক্সিট ডিল বিষয়ে তাঁর নিজের দলের সাংসদদের সমর্থনের অভাবকেই তাঁর পদত্যাগের প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরেন মে। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ব্রেক্সিট গণভোটের ফলাফলের মান রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন তিনি, এবং তাঁর বিশ্বাস, ওই গণভোটের ফল বাস্তবায়িত করা ব্রিটেনের কর্তব্য। "দুঃখের বিষয়, ব্রেক্সিট ডিলের জন্য আমি সাংসদদের সমর্থন যোগাড় করতে পারি নি। আমি শুক্রবার, ৭ জুন, পদত্যাগ করব," বলেন মে।
মে আরও জানান, নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামি সপ্তাহে, এবং যতক্ষণ নতুন নেতা নির্বাচিত না হচ্ছেন, মে তাঁর পদে থাকবেন। "আমাদের রাজনীতি ভারাক্রান্ত হতে পারে, কিন্তু এই দেশে ভালো বলার মতন, গর্ব করার মতন, আশা করার মতন কত কিছু রয়েছে," বলেন তিনি।
আপাতত আগামি ৩১ অক্টোবর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা গ্রেট ব্রিটেনের, যদিও সেই বিচ্ছেদের শর্ত এখনও অনুমোদন করে নি ব্রিটেনের সংসদ। এই অনুমোদন পেতে মে'র ব্যর্থতা নিয়ে তাঁর ওপর চাপ বাড়ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই, কিন্তু এই সপ্তাহে তা চরমে পৌঁছয় হাউজ অফ কমনসের প্রধান অ্যান্ড্রিয়া লেডসমের ইস্তফার পর। এছাড়াও তাঁর একাধিক ক্যাবিনেট সতীর্থ মে'র ব্রেক্সিট বিল নিয়ে নিজেদের সংশয় প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার তাঁর দ্রুতগতিতে কমতে থাকা কর্তৃত্ব বজায় রাখার শেষ চেষ্টা করেন মে, আরও একবার ইইউ (EU) উইথড্রয়াল বিল প্রকাশ মুলতুবি রেখে। এই নিয়ে চতুর্থবার তাঁর ব্রেক্সিট নীল নকশার জন্য সংসদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি।