অস্ত্রোপচারে পেট থেকে মিলল একটি বল্টু, কিছু সুতো, খেজুর বীজ আর কুল আঁটি। শনিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনা। হুগলির গোঘাট থানার বদনগঞ্জ শ্যামবাজারের বাসিন্দা জীবন রুইদাস। গত এক বছর ধরে পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিল জীবন। দিনদিন ফুলে যাচ্ছিল পেট। জীবনের বাবা অজয়বাবু আরামবাগের এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান ছেলেকে। সেখানে চিকিৎসা চললেও কোনও সমাধান হয়নি। এরপর গত ১৪ আগস্ট বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বছর পাঁচেকের ওই খুদেকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেটে কিছু রয়েছে জানতে পারেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুন: মৃত্যু হল দেশে জন্মানো প্রথম পেঙ্গুইনের
শনিবার শিশু চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি টিম অস্ত্রোপচার করে ওই শিশুর পেটে। এরপরই তাজ্জব হয়ে যান চিকিৎসকরা। জীবনের পেট থেকে মিলেছে ২০৩টি কুলের আঁটি এবং আরও অনেক কিছু। চিকিৎসকরা জানায়, ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদন্ত্রের সংযোগ স্থলেই এগুলি জমেছিল। হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপ্যাল (এমএসভিপি) উৎপল দাঁ বলেন, “ওই শিশুর পেটের ডানদিকে অ্যাপেন্ডিক্সের উপর দিকে ফোলা মত একটা অংশ বেশ শক্ত হয়েছিল। হাসপাতালে আউটডোরে দেখানোর পরই চিকিৎসকরা ভর্তি করে নেন তাকে। এক্স-রে করার পর অবশ্য কী রয়েছে তা ধরা পড়েনি।” চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথবাবু জানান, “যে জায়গায় এগুলি জমা ছিল তা খুবই সংকীর্ণ। তাই এগুলি মলের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারেনি। আর কিছুদিন থাকলে ওই নালি বন্ধ হয়ে যেতে পারত। ” ওই টিমে ছিলেন আর এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মধুসূদন চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “প্রথমে বুঝতে পারিনি কুল আঁটি রয়েছে ওই শিশুর পেটে। তবে কিছু একটা রয়েছে তা পেটে হাত দিয়ে পরীক্ষার সময়ও বোঝা গিয়েছিল।”

কীভাবে কুল আঁটি সহ ধাতব বস্তু ওই খুদের পেটে গেল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এক চিকিৎসকদের দাবি, এটি এক ধরনের মানসিক রোগ। কেউ চুল খেয়ে নেয়, কেউ মাটি খায়, আরও অন্য কিছু খেয়ে নেওয়ার প্রবণতা থাকে। তার ফলে সেগুলি পেটে গিয়ে জমাট বেঁধে যায়। ওই খুদেরও এমন কোনও সমস্যা ছিল বলে অনুমান করছেন চিকিৎসকরা।