সিএএ ঘিরে উত্তাল দেশ। পথে প্রতিবাদের পাশাপাশি বিরোধিতা গড়িয়েছে আদালতে। একটি-দু'টি নয়। ১৪০টি সিএএ বিরোধী মামলা হয় আদালতে। এহেন হাইপ্রোফাইল মামলারই এদিন শুনানি ছিল সর্বোচ্চ আদালতে। ফলে শুরু থেকেই টানটান উত্তেজনায় ভর্তি ছিল এজলাস।
এক নজরে এদিন কি হল এজলাসে...
ভিড় নিয়ে শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বোবদের কাছে অসন্তোষের কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল। এজলাসে উপস্থিতির জন্য নিয়ম করার দাবি তোলেন তিনি। বেণুগোপাল বলেন, 'আমেরিকা ও পাকিস্তানে এজলাসে উপস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে।' এজলাসের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।
সওয়াল জবাবের শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, এই মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো হতে পারে।
কংগ্রেস নেতা, আইনজীবী ও সিএএ বিরোধী মামলাকারী কপিল সিবাল এদিন আদালতকে জানান, আগামী এপ্রিল বা মে মাসেই এনপিআরের কাজ শুরু হবে। বহু রাজ্য এনপিআরের কার্যক্রমও শুরু করে দিয়েছে। সওয়ালে তিনি বলেন, 'দয়া করে আগামী তিন মাসের জন্য এনপিআর প্রক্রিযা স্থগিত করে দেওয়া হোক। এর মধ্যেই কোর্ট সিএএ নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে। তারপরই এনপিআরের কাজ করা উচিত।'
বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও এনপিআরের উপর স্থগিতদেশ জারির আবেদন করেন। এছাড়া প্রবীণ আইনজীবী আসাম চুক্তির কথা তুলে ধরে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশের দাবি করেন।
এরপর সওয়াল করতে দেখা যায় অ্য়াটর্নি জেনারেল কে কে বিণুগোপালকে। ১৪৩ আবেদনের মধ্যে কেন্দ্রকে ৬০টি আবেদনের ভিত্তিতে জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। এক্ষেত্রে বাকি আবেদনের উত্তর দেওয়ার জন্য বাড়ি সময় দাবি করেন অ্য়াটর্নি জেনারেল। কেন্দ্রের কথা না শুনে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না বলে জানান প্রদান বিচারপতি। ফের তিনি বলেন, এই মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো হতে পারে।
সিএএকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছেন দুই অসমীয়া। তাঁদের তরফে দাবি করা হয়, সাধারণ সিএএয়ের সঙ্গে তাদের রাজ্যের কোনও মিল নেই। ফলে তাদের আবেদন পৃথকভাবে বিচার করা হোক। এতে সম্মত হন প্রধান বিচারপতি। দু'সপ্তাহের মধ্যে আসামের আবেদনকারীদের তালিকা তৈরি করতে বলেন বিচারপতি বোবদে।
আরও পড়ুন: সিএএ-তে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট, চার সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের জবাব তলব
এবার ফের বলতে ওঠেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, 'উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করে ৪০ লক্ষকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯ জেলায় এই কাজ চলেছে। এরা ভোটাধিকার হারানোর পথে। কোর্ট সিএএ-এনপিআরের উপর স্থগিতাদেশ জারি করলে সমাজে অনেক বিভ্রান্তি দূর হবে।'
এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, সকল আবেদনকারীকেই নোটিস দেওয়া হবে। অবিশিষ্ট আবেদনগুলির জবাববের জন্য ছয় সপ্তাহ সময় দাবি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল। আবেদনকারীদের আইনজীবীরা সেই দাবির বিরোধিতা করেন।
উভয় তরফের সওয়াল জবাব শুনে সিএএ-এর উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের জবাব তলব করেছে সর্বোচ্চ আদালত।
Read the full story in English