সিএএ প্রতিবাদ আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য কবি ইমরান প্রতাপগাড়িকে শোকজ নোটিস পাঠাল বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ শহরের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গত ২৯ জানুয়ারি প্রতাপগাড়ির ডাকে সাড়া দিয়ে ঈদগাহ ময়দানে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ফলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনকে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছিল। সেই খরচ দাবি করেই কবিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। ক্ষতির পরিমান ধার্য করা হয়েছে ১.০৪ কোটি।
নোটিসে মোরাদাবাদ শহরের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ কুমারের তরফে বলা হয়েছে, ' ১৪৪ ধারা সত্ত্বেও আপনার (ইমরান প্রতাপগাড়ি) ডাকে সাড়া দিয়েই ঈদগাহ ময়দানে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। আইন-শৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করে অতিরিক্ত ব়্যাফ মোতায়েন সহ অন্যান্য সুরক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রত্যেক দিন যার খরচ ১৩.৪২ লক্ষ টাকা। যে কদিন এই আন্দোলন চলেছিল সুরক্ষা কর্মীরা সেখানেই ছিলেন। যার মোট অর্থ ১.০৪ কোটি।'
৭ তারিখ প্রতাপগাড়ির মোরাদাবাদেই সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তার আগের দিন, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রশাসন এই নোটিস জারি করে। মোরাদাবাদ শহরের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছেন, এলাকায় শান্তি বজায় থাকবে এই মর্মে তাঁকে বন্ডে সাক্ষর করতে বলা হলেও প্রতাপগাড়ি তা করেননি। এরপর ১২ তারিখ তাঁকে ডেকে পাঠানো হলেও তিনি হাজির হননি। জানা গিয়েছে, ওই কবিকে ১০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জামিনে মুক্ত ‘দেশদ্রোহী’ মায়ের সঙ্গে মেয়ের দেখা
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে উত্তরপ্রদেশের মোরাবাদ আসন থেকেই ভোটে লড়েছিলেন কবি ইমরান প্রতাপগাড়ি। যদিও পরাজিত হন তিনি। প্রশাসনের নোটিস সম্পর্কে সানডে এক্সপ্রেসকে কবি বলেন, 'সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলুক উত্তরপ্রদেশ সরকার সেটা চায় না। ৭ তারিখের আগে আমি মোরাবাদেই যায়নি। সেখানে কোনও আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা ছিল না। এইভাবেই প্রতিবাদীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। পুলিশও কর্তৃব্য ভুলেছে। জেলা প্রশাসন সু-কৌশলে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছে। তবে, আমরা এতে ভীত নই। এমন কোনও কথা আমি বলিনি যাতে আইনের শাসন ভেঙে পড়ে।' সরকারি এই নোটিসের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন কবি তথা কংগ্রেস নেতা প্রতাপগাড়ি।
মোরাবাদ শহরের এসপি অমিত কুমার আনন্দ বলেন, 'ক্ষতিপূরণের জন্য এই নোটিস দেওয়া হয়নি। আগাম অনুমানের ভিত্তিতে ব্যক্তিকে সাবধান করতেই এই ধরনের নোটিস দেওয়া হয়ে থাকে।' সিএএ প্রতিবাদ ঘিরে আইন-শঙ্খলা পরিস্থিতি খারপ হওয়ার ফলে এই নোটিস আরও ১৫০ জনকে পাঠানো হয়েছে। ডিসেম্বরের সিএএ প্রতিবাদ ঘিরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে উত্তরপ্রদেশে। মৃত্যু হয় যোগী রাজ্যের ১৯ জনের। চলে ভাঙচুর, আগ্নি সংযোগের ঘটনা। ফলে প্রচুর সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়। পরে ক্ষক্তিপূরণ দাবি করে বহু বিক্ষোভকারীর কাছে নোটিস পাঠান যোগী সরকার।
Read the full story in English