ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে বলেছেন, দেশ এখন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, প্রচুর হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছে, ফলে নাগরিকত্ব আইন সাংবিধানিক কি না সে নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হবে না।
প্রধান বিচারপতি বোবডের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ এ সম্পর্কিত আবেদন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এই প্রথম কেউ কোনও আইনকে সাংবধানিক বলে ঘোষণা করার আবেদন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, "এত হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। দেশ কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছে, এখন শান্তির জন্য উদ্যোগ নেওয়া উচিত... এই আদালতের কাজ হল কোনও আইনের বৈধতা বিতার করা, সাংবিধানিক বলে কোনও আইনকে ঘোষণা করা এ আদালতের কাজ নয়।"
এই বেঞ্চে ছিলেন, বিচারপতি বিআর গভাই ও সূর্য কান্ত। তাঁরা বলেন, হিংসা বন্ধ হলে নয়া নাগরিকত্ব আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে যে সব আবেদন হয়েছে, তার শুনানি হবে।
বিনীত ধান্দা নামের এক আইনজীবী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে সাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে সমস্ত রাজ্যকে তা লাগু করার নির্দেশ দেবার জন্য জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন করেছিলেন।
এ আবেদনে সমাজকর্মী, ছাত্র ছাত্রী ও "গুজব ছড়ানোর" দায়ে সংবাদমাধ্যমগুলির ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল।
১৮ ডিসেম্বর, শীর্ষ আদালত নাগরিকত্ব আইনের সাংবিধানিক বৈধতা পরীক্ষা করতে সম্মত হলেও, এর উপর স্থিতাবস্থা আরোপ করতে অস্বীকার করে।
নয়া সংশোধনী আইনে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে আগত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন ও পারসি সম্প্রদায়ের মানুষের নাগরিকত্ব দেবার কথা বলা রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বোবড ৫৯টি আবেদনের একটি ব্যাচ স্থির করেছেন, যার শুনানি হবে ২২ জানুয়ারি। এর মধ্যে রয়েছে মুসলিম লিগ ও কংগ্রেসের জয়রাম রমেশের করা আবেদনও।
আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছেন আরজেডি নেতা মনোজ ঝা, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং আইমিম নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসি।
মুসলিম সংগঠন জামিয়ত উলেমা ই হিন্দ, সারা আসাম ছাত্র সংগঠন (আসু), পিস পার্টি, সিপিআই, রিহাই মঞ্চ নামের অসরকারি সংগঠন, সিটিজেন্স এগেইন্সট হেট, আইনজীবী এমএল শর্মা, এবং আইনের কিছু ছাত্রও এই আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।