হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে অদৃশ্য বিভাজন তৈরি করছে কেন্দ্র। সোমবার এ অভিযোগ জানিয়েছে শিবসেনা। সেনার বক্তব্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের আড়ালে কেন্দ্র হিন্দু অবৈধ অভিবাসীদের বেছে বেছে নাগরিকত্ব দিচ্ছে কেন্দ্র। এর ফলে দেশে ধর্মযুদ্ধ বাধার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তারা।
শিবসেনার মুখপত্র সামনায় লেখা হয়েছে, "ভারতে এখন সমস্যার কোনও অভাব নেই, কিন্তু ক্যাবের নামে সমস্যা আমদানি করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে কেন্দ্র এই বিলের মাধ্যমে হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে অদৃশ্য বিভেদরেখা টানতে চায়।" লোকসভায় শিবসেনার ১৮ জন বিধায়ক রয়েছেন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের পক্ষে রায় লোকসভায়
সামনার সম্পাদকীয়তে আরও লেখা হয়েছে, "এ কথা সত্যি যে হিন্দুস্তান ছাড়া হিন্দুদের আর কোনও দেশ নেই। কিন্তু অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে যদি শুধু হিন্দুদের কাছে টানা হয়, তাহলে তা কি দেশে একটা ধর্মযুদ্ধ সৃষ্টি করবে।"
"যদি কেউ নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের আড়ালে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে চায় তাহলে তা আর যাই হোক, দেশের স্বার্থে নয়।"
তবে একই সঙ্গে যে সব প্রতিবেশী দেশ হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দাবি করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে।
কয়েকদিন আগেই বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছে শিবসেনা। মহারাষ্ট্রে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা সরকার গঠন করেছে।
সেনা প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে বলেছে, "তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, কিছু কাজ সত্যিই সম্ভব।"
কোথায় কোথায়, কেন লাগু হবে না ক্যাব?
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা বালাকোট আকাশ হামলার ইঙ্গিত দিয়ে মোদীর কাছে সেনার দাবি, "এবার উনি সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে এমন কিছু করুন যাতে ওই দেশগুলি থেকে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের না চলে আসতে হয়। এর ফলে দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও বাড়বে।"
তবে শিবসেনা অবৈধ অভিবাসীদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলেছে। এ ব্যাপারে বিজেপির সঙ্গে তারা একমত।
"অবৈধ অভিবাসীর সঠিক সংখ্যা জানতে হবে। যদি লাখো লাখো হয়, তাহলে তাঁরা ভারতের কোথায় থাকবেন?"
সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, "ইসলামিক দেশগুলিতে সংখ্যালঘু হিন্দুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়, মেয়েদের অপহরণ করা হয়, নির্যাতন করা হয়, কখনও কখনও জোর করে ধর্মান্তর ঘটানো হয়।"
"উত্তরপূর্ব ভারতের প্রায় সব রাজ্য এ বিলের বিরোধিতা করেছে। পশ্চিমবঙ্গও ক্যাবের বিরোধিতা করছে।"
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে মহারাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীরা পুর পরিষেবা দেবার ব্যাপারে নানারকম চাপ সৃষ্টি করছে। "এ পরিস্থিতিতে গুজরাট এবং কর্নাটকের মত রাজ্যগুলিকে অভিবাসীদের গ্রহণ করার ব্যাপারে বড় ও মানবিক ভূমিকা অবলম্বন করতে হবে।"