/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/09/Hijab-Row-Supreme-Court.jpg)
হিজাব ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
''ধর্মীয় চর্চার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু যে স্কুলে নির্দিষ্ট একটি পোশাক পরার নিয়ম রয়েছে সেখানেও কি ধর্মীয় চর্চার অধিকার ফলানো যায়?'' মঙ্গলবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা বহালের কর্নাটক হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশনের শুনানিতে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন শীর্ষ আদালতে এব্যাপারে শুনানির সময় বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা এক আবেদনকারীর আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়েকে বলেন, "আমরা যদি এক মুহুর্তের জন্য এটা ধরেও নিই যে স্কার্ফ বা হিজাব পরার অধিকার সবার আছে। কিন্তু সেই হিজাব আপনি এমন একটি স্কুলে কি পরতে পারেন যেখানে একটি ইউনিফর্ম নির্দিষ্ট করা রয়েছে?'' এদিন বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ আর জানায়, ''তাঁরা (কর্নাটক হাইকোর্ট) কারও কোনও অধিকার অস্বীকার করছে না। রাজ্য বলছে সবার জন্য স্কুলে যে পোশাক নির্ধারিত রয়েছে সেটা পরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে।''
এদিন সিনিয়র আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে 'চুন্নি' (দুপাট্টা) এবং 'হিজাব'-এর মধ্যে বিশেষ ফারাক নেই বলেই বোঝাতে চেয়েছিলেন। যদিও আদালত তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেনি। বিচারপতি ধুলিয়া এদিন বলেন, ''দু'টির মধ্যে অনেক ফারাক আছে।'' অন্যদিকে, বিচারপতি গুপ্তা বলেন, ''আপনি যদি একটি চুন্নিকে হিজাব হিসেবে দেখান তবে আপনি সম্ভবত সঠিক নন। চুন্নি কাঁধ ঢাকতে ব্যবহৃত হয়।''
আরও পড়ুন- রাতভর বৃষ্টিতে জলের তলায় বেঙ্গালুরু, রাস্তায় নামল নৌকা, বিরাট ক্ষতি তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে
এদিন সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানিতে আইনজীবী হেগড়ে তাঁর সওয়ালে জানান, মহিলারা বড়দের সামনে মাথা ঢাকতেই চুন্নি ব্যবহার করেন। তাঁর এই সওয়াল নিয়ে বিচারপতি গুপ্তা বলেন, ''না, পাঞ্জাবে এটি সংস্কৃতি নয়। শিখ মহিলারা গুরুদ্বারে প্রণাম জানাতে যাওয়ার সময় তাঁদের মাথা ঢাকতে এটি ব্যবহার করেন। এর চেয়ে বেশি কিছুই নয়।''
আর এক সিনিয়র আইনজীবী রাজীব ধাবনও আবেদনকারীদের পক্ষে এদিন সওয়াল করেছেন। তিনি এদিন তাঁর সওয়ালে বলেন, ''এই বিষয়টি সাংবিধানিক বিষয়গুলির সঙ্গে যুক্ত রযেছে। হিজাব পরা একটি অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন কিনা, সেটি সাংবিধানিক বেঞ্চের খতিয়ে দেখা দরকার।''
আরও পড়ুন- বাংলাদেশ সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সহযোগী: মোদী; তিস্তা-সহ বাকি ইস্যুগুলির দ্রুত সুরাহা হোক: হাসিনা
তবে বিচারপতি গুপ্তা ধাবনের সওয়াল প্রসঙ্গে পাল্টা বলেন, "এটি একটি অপরিহার্য অনুশীলন হতে পারে বা আবার নাও হতে পারে। কিন্তু একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে আপনি কি ধর্মীয় অনুশীলনের জন্য জোর দিতে পারেন? আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনাই হল ধর্মনিরপেক্ষ দেশ।'' যদিও বিচারপতির এই বক্তব্যের পরেই আইনজীবী ধাবন জানান, তিনি বিচারপতিদেরই আদালতে তিলক পরতে দেখেছেন। কোর্ট-টুতে পাগড়ি পরিহিত এক বিচারপতির ছবি রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।