পড়াশোনার আড়ালে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ। মধ্যপ্রদেশে বিদিশা জেলায় একটি খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে তাণ্ডব চালাল বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সমর্থকরা। ক্যাথলিক স্কুলে চড়াও হয়ে সোমবার দুপুরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তারা। পুলিশ এই ঘটনায় চার জনকে আটক করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাকিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তবে স্কুলে ভাঙচুরের ঘটনায় পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
জানা গিয়েছে, সোমবার বেলা ১২.৩০ নাগাদ বিদিশার গঞ্জ বাসোড়া তহসিলের সেন্ট জোসেফ হাই স্কুলে প্রায় ৩০০ জন ঢুকে পড়ে। সেই সময় স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছিল। উন্মত্ত হয়ে বজরং দলের সদস্যরা স্কুলে পাথর ছুড়তে শুরু করে, সম্পত্তি ভাঙচুর করে। স্কুলের প্রিন্সিপাল ব্রাদার অ্যান্টনি টাইনুমকাল দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা হাতে লোহার রড, পাথর নিয়ে ঢোকে স্কুলে। জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে দিতে স্কুলে ভাঙচুর চালায় তারা।
পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে প্রিন্সিপালের দাবি, "আমরা পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের এই বলে আশ্বস্ত করে, উন্মত্ত জনতা কিছু স্লোগান দিয়ে সেখান থেকে চলে যাবে। পুলিশ নিজের কথা রাখেনি। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পর সেখানে আসে পুলিশ।"
এসডিপিও ভারত ভূষণ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুযোগ বুঝে কিছু দুষ্কৃতী পাথর ছোড়ে স্কুলের কাচের জানালায়। স্কুল কর্তৃপক্ষকে শুধু নিরাপত্তাই দেওয়া হয়নি, পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে চারজন বজরং দলের সদস্যকে আটকও করেছে। পুলিশ ১৪৭ ধারায় দাঙ্গা এবং ৪২৭ ধারায় সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে।
আরও পড়ুন ভারতের চরিত্রের সঙ্গে সেকুলার শব্দ খাপ খায় না: হাইকোর্ট বিচারপতি
পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিদিশার এসপি এবং জেলাশাসক স্কুলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। উল্লেখ্য, এই সেন্ট জোসেফ স্কুল ১১ বছর আগে তৈরি হয়। ভোপাল-স্থিত মালাবার মিশনারি সোসাইটি অফ এএসএসআইএসআই প্রভিন্সে দ্বারা পরিচালিত। স্কুলে দেড় হাজার পড়ুয়া রয়েছে এবং অধিকাংশই হিন্দু তারা।
এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা নীলেশ আগরওয়াল বলেছেন, মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮ হিন্দু মেয়েকে গত ৩১ অক্টোবর ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল। জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো বিদিশার জেলা আধিকারিককে বিষয়টি নিয়ে চিঠিও লেখেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন